গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
মঙ্গলবার সকালেই বিজ্ঞপ্তি, ২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনকে ‘পরাক্রম দিবস’ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর তার পরেই টুইট করে নেতাজি স্মরণে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্তরিকতা ও পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও ব্রায়েন। টুইট করে তিনি দাবি করেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার মহান ভূমিপুত্রের সম্মানে প্রতি বছর সুভাষ উত্সব পালন করে আসছে। ২০১৪ সাল থেকে দার্জিলিংয়ে সরকারি পর্যায়ের অনুষ্ঠান হয়’। সঙ্গে তিনি আরও লেখেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৩ জানুয়রিকে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ দিন সকালে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্রতি সম্মান জানাতে ও তাঁর দেশের প্রতি দেওয়া আত্মবলিদানকে শ্রদ্ধা জানাতে ভারত সরকার দিনটিকে পরাক্রম দিবস হিসাবে ঘোষণা করল।’ কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘নেতাজির জন্মদিন বিশেষ ভাবে পালন করার উদ্দেশ্য দেশের সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করা। বিশেষত দেশের যুব সমাজকে আরও দেশ ও সমাজমুখী করে তোলা। দেশের প্রতি প্রেম জানানো।’
তৃণমূল শিবিরের ধারণা, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক মাস খানেক আগে নেতাজির জন্য একটি দিন উৎসর্গ করার জন্য বেছে নিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। তাই তড়িঘড়ি তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে নেতাজির জন্মদিনে মমতার সরকার গত কয়েক বছরে কী কী কর্মসূচি পালন করেছে এবং নেতাজিকে নিয়ে জাতীয় স্তরে কী দাবি করেছে, তা-ও জানানো হয়েছে। গত বছরই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী নেতাজির জন্মদিনে জাতীয় ছুটি ঘোষণার দাবি জানিয়েছিলেন। এ দিন টুইটে ডেরেক সে কথাটিও জানিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি নেতাজির ১২৫তম জন্মজয়ন্তী উদ্যাপনে কমিটি গড়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি নেতাজির গড়া দলের ফরওয়ার্ড ব্লককে। সেই নিয়ে আগেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছিল ফব।
এ দিন পরাক্রম দিবস ঘোষণার পরেও মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ তথা ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা দেবব্রত বিশ্বাস। এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এই যে ভারতের মানুষ নেতাজির জন্মদিন দেশপ্রেম দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছিল। সরকার আমাদের এই দীর্ঘদিনের দাবিকে মানতে চাইছে না। আমরা এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কোনও সঙ্ঘাতে যাচ্ছি না। শতবর্ষ উদ্যাপনের সময়ে গঠিত কমিটিতেও এই দাবি উঠেছিল। আজও আমরা সেই দাবিতেই অনড়। আজকের ভারতে একতা, বিশ্বাস, বলিদান প্রসঙ্গে মানুষকে সচেতন করতে, একজোট করতে নেতাজির ভাবনা ও দেশপ্রেমকে তুলে ধরতে হবে। ‘দেশপ্রম’ শব্দটিই সুভাষকে প্রকৃতার্থে ব্যাখ্যা করে। তাই সরকারের কাছেই আমরা সেই পুরোনো দাবিতেই সরব হব।’’