মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকারের অনুষ্ঠান শেষ মুহূর্তে কেন বাতিল করা হল, অক্সফোর্ড ইউনিয়নের তরফে তার কোনও সদুত্তর মিলল না। বৃহস্পতিবার বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সাড়া মেলেনি বিশ্ববিখ্যাত বিতর্ক আয়োজক সংগঠনটির কর্তৃপক্ষের।
এর আগে বুধবার সংগঠনের এক জন প্রতিনিধি জানিয়েছিলেন, “দুর্ভাগ্যক্রমে একেবারে শেষ মুহূর্তে অনুষ্ঠানটি পিছিয়ে দিতে হয়েছে। নতুন দিন ক্ষণ এখনও নির্ধারিত হয়নি। খুব শীঘ্র বিষয়টি চূড়ান্ত করার চেষ্টা চলছে।” কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত, কারিগরি কারণে না করোনা পরিস্থিতির জন্য, না কি কোনও মহলের চাপে— তা স্পষ্ট হয়নি।
সব কিছু ঠিক হয়ে যাওয়ার পরও শেষ মুহূর্তে অক্সফোর্ড ইউনিয়নে তাঁর বক্তৃতা স্থগিত হয়ে যাওয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস অভিযোগ করে, বিজেপির কলকাঠিতেই এটা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নবান্নে উষ্মা প্রকাশ করেন মমতাও। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি অক্সফোর্ড কর্তৃপক্ষকে কিছু বলছি না। তবে কেন এমন হল, সংবাদমাধ্যমের উচিত তা দায়িত্ব নিয়ে খুঁজে বার করা।’’
এর পর তিনি বলেন, “ঝড় যখন আসে তখন আকাশে চিল ওড়ে। সেই চিল দেখেই বোঝা যায় ঝড় আসছে। কিন্তু ঝড় থেমে গেলে সেই চিলই আকাশ থেকে নেমে এসে বাসা খোঁজে। এর থেকেই যা বোঝার বুঝে নিন।”
মুখ্যমন্ত্রীর আরও সংযোজন, “একটা কথা যেন মনে রাখা হয়, এই বাংলার মাটিকেই এক দিন প্রণাম করতে আসতে হবে। আগামী দিনে আমার কাছে চিল এসে বাসা খুঁজবে। বাংলা কারও কাছে এত সহজে হার মানে না। সর্বধর্ম সমন্বয়ের ধারা বাংলার মাটিতে রক্ষা করার ক্ষমতা আমার আছে। এ কথা যেন মাথায় রাখা হয়।”
অক্সফোর্ড ইউনিয়ন সূত্রের খবর, ভার্চুয়াল মাধ্যমে মমতার অনুষ্ঠানটি বুধবার ব্রিটিশ সময়ে সন্ধ্যা পাঁচটায় প্রচারের কথা ছিল। তার আগে এ’টি রেকর্ড করা হতো। ১ ডিসেম্বরের মধ্যে ছাত্রদের প্রশ্ন পাঠাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই রেকর্ডিংয়ের
আধ ঘণ্টা আগে অনুষ্ঠানটি স্থগিত ও পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ইউনিয়নের অনুষ্ঠানসূচিতে বুধ ও বৃহস্পতিবার বেশ কিছু বক্তৃতা ও বিতর্ক অনুষ্ঠান ‘বাতিল’ বলে ঘোষণা করা হলেও মমতার অনুষ্ঠানটিকে ‘স্থগিত’ বলা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে এ দিন দুপুরে ‘শ্রেণি ও শ্রমিক’ বিষয়ক একটি আলোচনার অনুষ্ঠানও। শুক্রবার দুপুরে প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের বক্তৃতাটি অবশ্য হবে বলেই জানানো হয়েছে।
মমতার অনুষ্ঠানটির নতুন দিন ক্ষণ নির্ধারণের চেষ্টা হচ্ছে কি না, এ দিন অবশ্য তা স্পষ্ট হয়নি। ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট বিয়েট্রিস বার বৃহস্পতিবারই তাঁর মেয়াদ পূর্ণ করেছেন। শুক্রবার নতুন প্রেসিডেন্টের হাতে তিনি দায়িত্বভার তুলে দেবেন। বিয়েট্রিস জানিয়েছেন, পরবর্তী প্রেসিডেন্টকে তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে অনুষ্ঠানের নতুন সময় চূড়ান্ত করতে বলবেন। অনুষ্ঠানটি হলে মমতা হতেন অক্সফোর্ড ইউনিয়নে বক্তৃতা দেওয়া ভারতের প্রথম কোনও মহিলা মুখ্যমন্ত্রী।