পোশাক দিতে হিমশিম, জুতোর ফরমান মমতার

বড়দের জন্য সাইকেল ও টেস্ট পেপারের বন্দোবস্ত হয়েছে। এ বার খুদে পড়ুয়াদের জুতো দেওয়ার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, প্রাথমিকের যে ছাত্রছাত্রীদের স্কুল-পোশাকের টাকা দিতেই হিমশিম খায় সর্বশিক্ষা মিশন, তাদের জুতো দেওয়া হবে কী উপায়ে, প্রশ্ন উঠছে সে নিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর ও মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:৪৩
Share:

বড়দের জন্য সাইকেল ও টেস্ট পেপারের বন্দোবস্ত হয়েছে। এ বার খুদে পড়ুয়াদের জুতো দেওয়ার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, প্রাথমিকের যে ছাত্রছাত্রীদের স্কুল-পোশাকের টাকা দিতেই হিমশিম খায় সর্বশিক্ষা মিশন, তাদের জুতো দেওয়া হবে কী উপায়ে, প্রশ্ন উঠছে সে নিয়ে।

Advertisement

মঙ্গলবার বীরভূম থেকে বর্ধমানে মাটি উৎসবে যাওয়ার পথে পানাগড়ে রাস্তার পাশে একটি প্রাথমিক স্কুলে ঢুকে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে খালি পায়ে কয়েক জন পড়ুয়াকে দেখে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করেন তিনি। নির্দেশ দেন, প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য জুতোর ব্যবস্থা করতে হবে।

কিন্তু এর জন্য কোন দফতর টাকা দেবে, তা পরিষ্কার নয়। পড়ুয়াদের জুতো দেওয়ার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে বলে মাস কয়েক আগে বিধানসভায় জানান শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবু। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বর্ধমানে ঘোষণা করেছেন, প্রাথমিক স্কুলের সমস্ত ছাত্রছাত্রীকে জুতোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। এটা পরিকল্পনা। আমরা তাঁর সহযোগী হিসেবে দফতর সামলাই। নিশ্চয় যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা করব।”

Advertisement

খয়রাতির নজির অবশ্য এই সরকারের আমলে ভুরিভুরি। কিছু দিন আগেই কয়েক কোটি টাকা খরচ করে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের টেস্ট পেপার দেওয়া হয়েছে। বিরোধীদের প্রশ্ন, সাধারণ মানুষের করের টাকায় কেন লক্ষ-লক্ষ পড়ুয়াকে জুতো বিলি করা হবে? নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (এবিপিটিএ) রাজ্য সম্পাদক সমর চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘এটা তো ভোটের আগে চমক মাত্র। সদিচ্ছা থাকলে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমতায় এসেই এই ব্যবস্থা করতে পারতেন! তখনও তো ওই পড়ুয়াদের পায়ে জুতো ছিল না! তখন কি ওঁর চোখে পড়েনি?’’

প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত দারিদ্রসীমার নীচে থাকা পড়ুয়াদের পোশাক দেওয়ার জন্য স্কুলগুলিকে টাকা দেয় সর্বশিক্ষা মিশন। পড়ুয়া পিছু ৪০০ টাকা করে পাঠানো হয় স্কুলের অ্যাকাউন্টে। কিন্তু, জানুয়ারিতে সেই টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা পৌঁছয় মে-জুন নাগাদ। ফলে পড়ুয়াদের পোশাক দিতে দিতে বছরের অর্ধেক পেরিয়ে যায়। এখন জুতো বিলির ঘোষণায় আরও বিপাকে পড়েছেন মিশনের জেলার কর্তারা। কিন্তু, ঘোষণা যেহেতু খোদ মুখ্যমন্ত্রীর, প্রকাশ্যে কেউ কিচ্ছু বলছেন না। এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পোশাকের টাকা দিতেই হিমশিম খাই। এ বার জুতো দেওয়ার সরকারি নির্দেশ এলে কী করব জানি না!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement