Malay Roy

পদত্যাগ নিয়ে ভোটাভুটি নয়, ২৪ ঘণ্টা আগে উল্টো সুর পুরপ্রধানের

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো গত ৮ মার্চ মলয়কে পদত্যাগ করার কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু কী অপরাধে তাঁকে সরানো হচ্ছে, সেই প্রশ্নে অনড় ছিলেন মলয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৫ ০৭:৫৬
Share:

বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠকে মলয় রায়। রবিবার বিকেলে। —নিজস্ব চিত্র।

কোনও ভোটাভুটি নয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে সম্মান জানিয়ে আজ, সোমবার বোর্ড অব কাউন্সিলর্সের বৈঠকে তাঁর পদত্যাগপত্র গৃহীত করাবেন পানিহাটির পুরপ্রধান মলয় রায়। রবিবার বিকেলে বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে স্পষ্ট ভাবে সে কথা জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তিনিই তো গোপন ব্যালটে ভোটের কথা বলেছিলেন। এ দিন মলয় অবশ্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ শিরোধার্য। এটাই আমাদের দলের নিয়ম। সেটা আমিও মেনে চলব।’’

Advertisement

দীর্ঘ দিন ধরেই পানিহাটির পুর পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ উঠছিল। সম্প্রতি সোদপুর অমরাবতী মাঠের বড় অংশ বিক্রির পরিকল্পনা নিয়ে জল্পনা ছড়ায়। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে অমরাবতী মাঠ অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো গত ৮ মার্চ মলয়কে পদত্যাগ করার কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু কী অপরাধে তাঁকে সরানো হচ্ছে, সেই প্রশ্নে অনড় ছিলেন মলয়। ১১ মার্চ ফের মলয়কে ফোন করে পদত্যাগের জন্য বলেন পুরমন্ত্রী। ওই রাতে ফিরহাদের বাড়িতে গিয়ে পদত্যাগপত্র দেন মলয়। ১২ মার্চ সন্ধ্যায় মহকুমাশাসকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

পরদিন মলয় দাবি করেন, রাজ্যের পুর আইন অনুযায়ী তিনি বোর্ড অব কাউন্সিলর্সের বৈঠক ডেকেছেন। কত জন পুরপ্রতিনিধি তাঁর পদত্যাগে সম্মতি জানাচ্ছেন, তা জানতে প্রয়োজনে গোপন ব্যালটে ভোট হবে। মলয়ের এই বার্তায় প্রশ্ন ওঠে, তা হলে কি তিনি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে পরোক্ষ ভাবে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন? একই ভাবে মলয়ের ‘খোলা মাঠে খেলা হবে, খেলোয়াড় প্রস্তুত আছে’ কথাতেও জল্পনা তৈরি হয়, তা হলে কি স্থানীয় রাজনৈতিক কোনও প্রভাবশালীর মদতেই এতটা ‘সাহস’ দেখাচ্ছেন পুরপ্রধান?

Advertisement

আজ, সোমবার বৈঠকের আগে রবিবার বিকেলে অবশ্য সুর বদল করে মলয় জানান, তৃণমূলের প্রথম দিন থেকে তিনি আছেন। দল তাঁকে পুরসভার বিরোধী দলনেতা, উপ-পুরপ্রধান এবং পুরপ্রধান করেছে। তাই দলনেত্রীর নির্দেশকে মান্যতা দেওয়া তাঁর কর্তব্য। মলয়ের পদত্যাগ নিয়ে বিতর্ক যখন চরমে, সেই পরিস্থিতিতে শুক্রবার দোলের এক উৎসবে উপস্থিত হয়ে তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক বলেছিলেন, ‘‘মলয়দাকে দীর্ঘ দিন ধরে চিনি। উনি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মানবেন বলেই আশা করি।’’ কিন্তু পদত্যাগ নিয়ে দীর্ঘ টালবাহানার পরে আচমকা সুর বদল কেন? মলয় বলেন, ‘‘দল করতে এসেছি। সেখানে দেনা-পাওনার কোনও বিষয় নেই।’’ যদিও রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধাচারণ পুরপ্রতিনিধিদের বড় অংশ করবেন না এবং তাঁরও সেটা করা ঠিক হবে না, তা হয়তো দেরিতে হলেও বুঝেছেন মলয়।

এ দিন মলয় দাবি করেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পদত্যাগ করেছি। বোর্ড মিটিংয়ে সেই পদত্যাগপত্রে সব পুরপ্রতিনিকেই মান্যতা দিতে হবে।’’ পানিহাটিতে পুরপ্রধান পদে দল যাঁকে নির্বাচিত করবে, তাঁকে তিনিও সমর্থন করবেন বলে জানান মলয়। বলেন, ‘‘নতুন যিনি ওই পদে বসবেন, তিনি চাইলে সব রকম সহযোগিতা করব।’’ তবে অমরাবতী মাঠ বিতর্কে তিনি কোনও ভাবেই যুক্ত নন বলেও দাবি করে মলয় বলেন, ‘‘আমি কোনও দুর্নীতিতে যুক্ত নই। পুরমন্ত্রীও তাতে ক্লিনচিট দিয়েছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement