বারুইপুর সংশোধনাগারে বন্দি-কারাকর্মী সংঘর্ষ।
বন্দি এবং জেলকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে উঠল বারুইপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার। সোমবার বিকেলে এক বন্দিকে জেলকর্মীরা অকারণে মারধর করেছে, এই অভিযোগে বাকিরা রীতিমতো মারমুখী হয়ে ওঠেন। সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলকর্মী এবং আধিকারিকরা বন্দিদের ওয়ার্ডে গেলে সেখানে রীতিমতো সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। জেল সূত্রে খবর, বন্দিদের হাতে বেধড়ক মার খেয়েছেন কয়েক জন কারাকর্মী।
পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে বাড়তি বাহিনী এসে পৌঁছয়। জেলা পুলিশের বাহিনীও এসে পৌঁছয় জেলে। রাত পর্যন্ত চলে দু’পক্ষের সংঘর্ষ। সূত্রের খবর, এক শ্রেণির জেলকর্মীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরেই দুর্নীতির অভিযোগ তুলছেন বন্দিরা। তাঁদের অভিযোগ, জেলকর্মীদের ঘুষ না দিলে আদালতের নির্দেশ থাকলেও প্যারোল পাচ্ছেন না বন্দিরা। অভিযোগ, সম্প্রতি সাব্বির আলম ওরফে উল্লু রাজু নামে এক বন্দির বাবার মৃত্যু হয়। জেল কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতায় প্যারোলে ছাড়া পাননি উল্লু রাজু।
অভিযোগ, আরশাদ শেখ নামে এক বন্দি জেলকর্মীদের ‘খুশি’ না করায় তাঁকে অকারণে সেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তাঁকে জেলের মধ্যে কোনও কাজের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না যা থেকে তিনি সামান্য রোজগার করতে পারেন। আরশাদ গত পাঁচ দিন ধরে জেলে অনশন করছেন। তার পরেও জেল কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ। অন্য দিকে বন্দিদের আত্মীয়দের অভিযোগ, পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত নাসির খান, সুমিত বাজাজরা জেলের মধ্যে যথেচ্ছ খরচ করেন বলে বর্ষবরণের রাতেও প্যারোলে ছাড়া পান।
আরও পডু়ন: নির্ভয়া: কাল ফাঁসি হচ্ছে না দণ্ডিতদের, স্থগিত অনির্দিষ্টকালের জন্য
আরও পডু়ন: দিদিকে ‘বলে’ বিপদে, পুলিশের মার খেয়ে মমতারই শরণাপন্ন তরুণী
জেল কর্মীদের একটি অংশ জানাচ্ছেন, দীর্ঘ দিন ধরে বন্দিদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছিল। সোমবার এক জেলকর্মী এক বন্দিকে মারধর করেন বলে অভিযোগ তোলেন বন্দিরা। তার পরেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে জেল চত্বর। এই সংবাদ প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত কারা দফতরের কোনও আধিকারিকের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে, বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার রশিদ মুনির খান বলেন, ‘‘পরিস্থিতি এই মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণে। এক জন জেলকর্মী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকিটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’