সেতু ভেঙে পড়ার পর। ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে। বুধবার সকালে। নিজস্ব চিত্র।
মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ায় কলকাতা-সহ রাজ্যের অন্যান্য সেতু নিয়েও ঘোরতর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে জনমানসে। অন্য সেতুগুলোর ঠিক কী অবস্থা? কেমন আছে তারা? যাঁদের গাফিলতিতে মাঝেরহাট সেতু ভাঙল, তাঁদের শাস্তিরই বা কী ব্যবস্থা হচ্ছে?
মূলত এই সব প্রশ্ন তুলে বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থে দু’টি মামলা করা হয়েছে। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে উচ্চ আদালতেরই এক আইনজীবী এবং বিরাটির এক বাসিন্দার তরফে মামলা দু’টি দায়ের করা হয়েছে।
এ দিন জনস্বার্থে প্রথম মামলাটি দায়ের করেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। মামলার আবেদনে তিনি জানান, কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সেতুগুলি কী অবস্থায় রয়েছে, সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণই বা কী ভাবে হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে স্বাধীন একটি কমিটি গড়ে দিক আদালত। কেন্দ্রের নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনে সেতুগুলি তৈরি হয়েছে কি না, তাদের রক্ষণাবেক্ষণ সেই নির্দেশিকা মেনে হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখে আদালতে রিপোর্ট পেশ দিতে বলা হোক সেই কমিটিকে।
আরও খবর: হাঁটতে গিয়েও গর্তে পড়তে পারি, মন্ত্রী বিঁধলেন বিরোধীদের
দ্বিতীয় মামলাটি দায়ের করেছেন বিপ্লব চৌধুরী নামে বিরাটির এক বাসিন্দা। তাঁর আইনজীবী অর্ণব সেনগুপ্ত জানান, মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, মাঝেরহাট সেতুর ভেঙে প়ড়ার পিছনে যাঁদের গাফিলতি রয়েছে, তাঁদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক। সেই সঙ্গে মৃতদের পরিবারকে এবং আহতদের যথোচিত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা হোক।
এ দিন বেলা সাড়ে ১০টার কিছু পরে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বসতেই মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়া নিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন দুই আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় ও অনিন্দ্যসুন্দর দাস। তাঁরা দাবি করেন, ওই দুর্ঘটনা নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করুক প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। একই সঙ্গে ওই দুই আইনজীবীর আবেদন, রাজ্যের সব সেতু কী অবস্থায় রয়েছে, তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখে রাজ্য সরকার যাতে আদালতে একটি রিপোর্ট পেশ করে, তার নির্দেশ দেওয়া হোক।
ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনা আদালতের নজরে এসেছে। তবে আদালত এই নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করতে চায় না। আইনজীবীরা কী চাইছেন, তা লিখিত ভাবে জানাতে পারেন।