মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
শুক্রবার মহুয়া মৈত্রের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেও তাঁর নিজের খাসতালুকে কিন্তু জোড়া অস্বস্তিতেই মহুয়া। একে তো, তাঁর কেন্দ্র কৃষ্ণনগর লোকসভা আসনটিকে পাখির চোখ করে কর্মসূচি শুরু করেছে বিজেপি। এ বারে মহুয়াকে ‘দেশ বিরোধী’ তকমা দিয়ে সেই প্রচারে আরও জোর বাড়াবেন রাজ্য বিজেপির নেতারা। অন্য দিকে, জেলায় দলের মধ্যেও মহুয়ার ‘শত্রু’ অনেক। তাঁর একমাত্র ভরসা দলের শীর্ষ নেতৃত্ব, এথিক্স কমিটিতে তাঁর বিষয়টি যাওয়ার পরেও যাঁরা তাঁকে কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী করেছেন। তবে মমতা বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থন থাকলেও তাতে মহুয়ার দলের মধ্যে কতটা সুবিধা হবে, তা এখনই হলফ করে কেউ বলতে পারছেন না।
বস্তুত, জেলায় দলের একাংশ মনে করছে, বাইরের ‘শত্রুর’ থেকে মহুয়ার বেশি সমস্যা অন্দরে। চাপড়ার বিধায়ক রুকবানুর রহমান, নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁ-দের সঙ্গে মহুয়ার ‘মধুর’ সম্পর্ক। মোটে ৬০ হাজারের কিছু বেশি ভোটের ব্যবধানে জেতা আসন ধরে রাখতে গেলে এই সব বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ‘লিড’ দরকার তাঁর। রুকবানুর অবশ্য বলছেন, “সব রকম ভাবে তাঁর পাশে আছি।’’ কিন্তু বিধানসভা ভোটে তাঁর বিরুদ্ধে মহুয়া ঘনিষ্ঠ জেবের শেখ যে প্রার্থী হন, সেটা কি ভুলে গিয়েছেন রুকবানুর? মহুয়ার বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম নেতৃত্বের কাছে নালিশ জানান কল্লোল। তিনিও বলছেন, “সাংসদের সঙ্গে যেটা করা হচ্ছে, সেটা অত্যন্ত নিন্দনীয়।” সম্প্রতি মহুয়ার সঙ্গে সখ্য তৈরি হওয়া তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহার কথায়, “সকলেই বুঝতে পারছে যে, আদানির বিরুদ্ধে প্রশ্ন করায় প্রতিহিংসা থেকেই বিজেপি এটা করল।”
এই সখ্য অন্যদের সঙ্গেও তৈরি না হলে মহুয়ার বিপদ। দিন কয়েক আগে কৃষ্ণনগরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ঘোষণা করেন, মহুয়াকে হারাতে তাঁরা সর্বশক্তি প্রয়োগ করবেন। তার পর কৃষ্ণনগরে সভা করে গিয়েছেন শুভেন্দু অভিকারী। দিলীপ ঘোষের আসার কথাও শোনা যাচ্ছে জেলা নেতৃত্বের কাছে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির কিসান মোর্চার রাজ্য সভাপতি মহাদেব সরকারের চ্যালেঞ্জ, “এ বার মহুয়াকে রেকর্ড ভোটে হারাব।”