রাজ্যপালকে আক্রমণ মহুয়া মৈত্রের। —ফাইল চিত্র
এ রাজ্যে রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের সঙ্ঘাত নতুন কিছু নয়। রাজ্যপালের আমন্ত্রণে চা চক্রে মুখ্যমন্ত্রী যোগ না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন রাজ্যপাল। তা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন জগদীপ ধনখড়। এ বার পাল্টা আক্রমণ করলেন মহুয়া মৈত্র। রাজ্যপালকে ‘আঙ্কলজি’ সম্বোধন করে মোদী-অমিত শাহের দিকেও কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ।
শনিবার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে রাজভবনে চা চক্রের আয়োজন করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সেই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকালে রেড রোডের অনুষ্ঠানের শেষে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে আসেন। তবে বিকেলের কর্মসূচিতে তিনি যে থাকতে পারবেন না, সে কথাও রাজ্যপালকে জানিয়ে আসেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে আসার পরেও রাজ্যপালের উষ্মা কমেনি। সন্ধ্যার ওই চা চক্রে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত ফাঁকা আসনের ছবি টুইটারে পোস্ট করে তীব্র আক্রমণ করেন ধনখড়। তিনি লেখেন, ‘‘ফাঁকা আসনটি থেকেই স্পষ্ট, একটা অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যা বাংলার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং নৈতিকতার সঙ্গে খাপ খায় না। এই অনাবশ্যক অবস্থানের সপক্ষে কোনও যুক্তিই খাটে না।’’ পাশাপাশি চা চক্রে শামিল না হয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর প্রশাসনিক আধিকারিকরা খারাপ নজির গড়েছেন, সংবিধান মেনে চলছেন না— এমন একাধিক অভিযোগ তুলেছিলেন।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসেও অব্যাহত তিক্ততা, চা-চক্রে মমতা যোগ না দেওয়ায় ঝাঁঝালো টুইট রাজ্যপালের
সেই ঘটনার রেশ টেনেই এ দিন রাজ্যপালকে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন মহুয়া মৈত্র। লিখেছেন, ‘‘আঙ্কলজি এ বার দাবি করছেন যে, পশ্চিমবঙ্গের রাজভবনের উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। বিশ্বাস করুন, এটা এমন বিষয়, যা আপনার গুজরাতের বসরা অন্য যে কারোর চেয়ে অনেক ভাল করতে পারেন। আমরা সবাই এ ব্যাপারে শিক্ষানবীশ।’’ মহুয়ার কটাক্ষ যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে উদ্দেশ্য করে, তা বোঝাই যাচ্ছে। যদিও রাজভবনের তরফে এর জবাবে কিছু বলা হয়নি।
আরও পড়ুন: ‘সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করে বিজেপি-আরএসএস!’ রাহুলের টুইট ঘিরে বাগযুদ্ধ
রাজভবনের শনিবারের চা চক্র নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন মহুয়া। রাজ্যপাল টুইট করে জানিয়েছিলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির জন্য রাজভবনের অতিথির সংখ্যা রাখা হয়েছিল ৩৫-এর কম। সামাজিক দূরত্ব ও কোভিড-১৯ এর অন্যান্য বিধিও মানা হয়েছে। কিন্তু মহুয়া মৈত্র রাজভবনের ওই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রিতদের তালিকা টুইটারে শেযার করে লেখেন, ‘‘করোনার আবহেও রাজভবনের চা চক্রে আমন্ত্রণ পাওয়া ৯৬ জন ভাগ্যবানের তালিকা (এর সঙ্গে অন্যান্য কর্মী, নিরাপত্তারক্ষী ও কেটারিং-এর লোকজন অতিরিক্ত)।’’ অর্থাৎ করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও এত মানুষের জমায়েত নিয়ে রাজভবনের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন তৃণমূল সাংসদ। রবিবার তার সঙ্গে মোদী-শাহকে টেনেও কটাক্ষ করায় রাজ্যপালের সঙ্গে তৃণমূলের সঙ্ঘাতের বাতাবরণ আরও বাড়ল বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।