রুমানার ধর্মীয় পরিচয় তুলে ধরা নিয়ে সাফাই মহুয়ার।
পরীক্ষার্থীর ধর্ম পরিচয় তুলে ধরা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না। আবেগের বসে মুখ থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। দাবি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাসের। উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষণা করতে গিয়ে বৃহস্পতিবার প্রথমা রুমানা সুলতানার মুসলিম পরিচয় তুলে ধরেছিলেন তিনি। তা নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় নেটমাধ্যমে তো বটেই, রাজনৈতিক মহলেও বিতর্কের ঝড় বয়ে গিয়েছে। তিনি নিজেও এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। সেই পরিস্থিতিতে শুক্রবার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন মহুয়া। তাঁর দাবি, আসলে সকলের সঙ্গে রুমানার গৌরব ভাগ করে নিতে চেয়েছিল সংসদ।
মহুয়ার আচরণ নিয়ে শিক্ষা মহলও রীতিমতো সরগরম। শুক্রবার দুপুরে সল্টলেকে শিক্ষা সংসদের দফতরের বাইরে বিক্ষোভ দেখান শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের সদস্যরা। মহুয়ার পদত্যাগের দাবি তোলেন তাঁরা। বিক্ষোভ হটাতে এলে পুলিশের সঙ্গে সঙ্ঘর্ষও বাধে তাঁদের। বেশ কয়েক জনকে আটক করা হয়।
সেই পরিস্থিতিতে শিক্ষা সংসদেই এই বিতর্ক নিয়ে মুখ খোলেন মহুয়া। তিনি বলেন, ‘‘সংসদের ইতিহাসে এই প্রথম এত ভাল রেজাল্ট। মেয়েটি শিক্ষার রত্ন। ওকে নিয়ে কথা বলার সময় বেগম রোকেয়ার কথা মনে পড়ছিল আমার, যিনি একই রকম ভাবে পড়াশোনায় ভাল ছিলেন। একই রকম ভাবে সকলের মধ্যে থেকে উঠে এসেছিলেন। তাই আবেগের বশে বলে ফেলেছিলাম। সাংবাদিকরা মেয়েটির সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। তাই কিছু তথ্য দিয়েছিলাম, যাঁতে মেয়েটিকে তাঁরা বুঝতে পারেন। মেয়েটির গৌরব সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চেয়েছিল সংসদ।’’
তবে মহুয়া ‘আবেগের বশে’ বলেছেন বলে সাফাই দিলেও, গোটা ঘটনায় রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে। মহুয়ার আচরণে রাজ্য সরকারের তোষণমূলক আচরণ ফুটে উঠছে বলে আক্রমমে শান দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কার নির্দেশে মহুয়া ওই ছাত্রীর ধর্মীয় পরিচয় তুলে ধরলেন, আসলে কাকে তুষ্ট করতে চেয়েছিলেন তিনি, প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। এ নিয়ে শুক্রবার সকালেই টুইট করেন বিজেপি-র আইটি সেলের প্রধান তথা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য এবং পশ্চিমবঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
যদিও তৃণমূলের তরফেও একই ভাবে মহুয়ার আচরণের নিন্দা করা হয়েছে। দলের বিধায়ক তাপস রায় বলেন, ‘‘আমার মনে হয় এটা একেবারেই হওয়া উচিত ছিল না। ধর্মের উল্লেখ করে এক জন পড়ুয়ার পরিচয় দেওয়া একেবারেই সমীচীন নয়।’’ গোটা বিতর্কে রুমানাও জানিয়েছেন, ধর্ম না এনে তাঁকে শুধু ছাত্রী বললেই ভাল হত।