৬২৬ বছরে পা দিল মাহেশের রথ।
কোভিডের কারণে গত দু’বছর বন্ধ ছিল হুগলির মাহেশের রথ। পুরীর পর দেশের সব থেকে পুরনো এই রথে এ বার ফিরল পুরনো সেই চেনা ছবি। ৬২৬ বছরের এই রথযাত্রায় এ বার শ্রীরামপুরে ভিড় জমিয়েছেন প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ। ওই ভিড় সামলাতে মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ। করোনা বিধি মানা হচ্ছে কি না, নজর রাখছে প্রশাসনও।
শুক্রবার ভোরে মন্দিরে বসেই ভোগ খান জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা। তাঁদের গর্ভগৃহ থেকে নিয়ে আসা হয় মন্দির প্রাঙ্গনে। প্রথমে রথে বসানো হয় নারায়ণ শিলা। দুপুর দু’টোয় রথে ওঠেন জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা। রথে বসিয়ে সাজানো হয় বিগ্রহ। বিকেল চারটে থেকে গড়াতে শুরু করে রথের চাকা। হাজির ছিলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, নির্মল মাঝি, তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক, সঙ্গে শ্রীময়ী চট্টরাজ প্রমুখ।
মাসখানেক আগে উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটির দণ্ড মহোৎসবে ভিড়ের চাপে মৃত্যু হয় তিন জনের। তার পরেই সতর্ক রাজ্য প্রশাসন। মাহেশে মন্দিরে প্রবেশের মুখে এবং রথের যাত্রাপথের পাশে ব্যারিকেড করা হয়েছে। ভিড়ে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য রয়েছে মেডিক্যাল ক্যাম্প। অ্যাম্বুল্যান্স এবং দমকলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। করোনা সংক্রমণ বাড়ছে বলে ভক্তদের স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থাও রয়েছে।
মাহেশের রথ আগে ছিল কাঠের। বার বার ভেঙে যেত। সে কারণে কলকাতার শ্যামবাজারের বসু পরিবার লোহার রথ তৈরি করিয়ে দিয়েছিল। ১৩৭ বছর আগে সেই রথ নির্মাণ করেছিল মার্টিন বার্ন কোম্পানি। রথের ওজন ১২৫ টন। উচ্চতা ৫০ ফুট। সামনে থাকে সারথি আর দু’টি তামার ঘোড়া। লোহার ১২টি চাকা টেনে নিয়ে যায় রথ।