মাঠে কাজ করতে করতে, এমনকী নৌকায় যেতে যেতে বজ্রপাতে প্রাণ হারাচ্ছেন মানুষ। এ ভাবে বেঘোরে প্রাণহানি ঠেকাতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে রাজ্য সরকার।
এক মার্কিন সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ভবন-সহ রাজ্যের কয়েকটি একটি যন্ত্র বসানো হয়েছে। বজ্র নিয়ন্ত্রণ করতে না-পারলেও সেই যন্ত্র ৪৫ মিনিট আগেই বাজ পড়ার খবর দেবে। সেই অনুযায়ী সতর্ক করা যাবে সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজনকে। বৃহস্পতিবার নবান্নে এ কথা জানিয়ে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিব সুরেশ কুমার বলেন, ‘‘এতে বজ্রপাতে প্রাণহানি কমানো যাবে।’’
অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার আধুনিক সেন্সর বসিয়ে বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা কমিয়ে এনেছে। তার পরেই ওই প্রযুক্তির ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয় পশ্চিমবঙ্গ। বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ওই সেন্সরযন্ত্র বসানো হয়েছে খড়্গপুর, বড়জোড়া, হলদিয়া, শিলিগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারে। নবান্নের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে নতুন প্রযুক্তির সংযোগ করা হয়েছে। প্রযুক্তির জন্য আমেরিকার সংস্থাকে বছরে ৪৪ লক্ষ টাকা দেবে রাজ্য। যন্ত্রের কর্ম-প্রণালী ব্যাখ্যা করেন বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের এক কর্তা। তিনি জানান, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে সেটটপ বক্সের মাধ্যমে এসএমএস করে টেলিভিশনে সম্ভাব্য বজ্রপাতের খবর পাঠানো হবে। যেখানে বাজ পড়বে, তার ২০০ মিটারের মধ্যে কাজ করবে ওই যন্ত্রের সেন্সর। ওই কর্তা জানান, কলকাতার মতো শহরে গায়ে গায়ে ঘরবাড়ি রয়েছে। এখানে বাজ পড়ে কম। গ্রামে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বাড়িঘর। সেখানে বাজ পড়ে বেশি।
বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে খবর, বজ্রপাতে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে রাজ্য সরকারের প্রচুর খরচ হচ্ছে। যন্ত্রের দৌলতে প্রাণহানি কমানো গেলে সেই খরচও কমবে। সচিব বলেন, ‘‘২০১৬-’১৭ সালে রাজ্যে বাজ পড়ে ২৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে প্রতিটি পরিবারকে।’’