প্রতীকী ছবি।
ভোটের মরসুমে জঙ্গলমহল থেকে কেন্দ্রীয় সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যেতে চায় কেন্দ্র। তাতে ঘোর আপত্তি রাজ্যের। দু’পক্ষই নিজের অবস্থানে অনড়।
প্রথমে কেন্দ্রের মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকার তালিকা এবং পরে সিকিয়োরিটি রিলেটেড এক্সপেন্ডিচার (এসআরই) তকমাভুক্ত জেলার তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বীরভূমের একাংশ। রাজ্য বাঁকুড়াকে ওই তালিকায় আরও অন্তত এক বছর রাখতে চাইলেও সেই আর্জি মানতে চায়নি কেন্দ্র। শুধু ‘এসআরই’ তালিকায় থেকে গিয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলা। সেই জেলার জঙ্গলমহলেএই মুহূর্তে ৩৫ কোম্পানি বাহিনী রয়েছে।
সূত্রের খবর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সম্প্রতি রাজ্যকে জানিয়েছিল, নির্বাচনী পর্বে দেশে নিরাপত্তার জন্য বিপুল পরিমাণ বাহিনী দরকার। তাই ওই ৩৫ কোম্পানি বাহিনী জঙ্গলমহল থেকে সরিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় কাজে লাগানো হবে। কিন্তু রাজ্য সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রককে। তাতে এখনও কর্ণপাত করেনি কেন্দ্র। তাই ফের নিজেদের আপত্তির কথা মন্ত্রককে জানাতে চলেছে নবান্ন। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘রাজ্যের সম্মতি না নিয়ে কেন্দ্র এ ভাবে বাহিনী প্রত্যাহার করতে পারে না। কারণ, আইনশৃঙ্খলা এবং সার্বিক নিরাপত্তার প্রশ্নে রাজ্যকেই পদক্ষেপ করতে হয়। কেন্দ্রকে ফের অনুরোধ করা হবে, যাতে জঙ্গলমহল থেকে বাহিনী তুলে নেওয়া না হয়।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রশাসনিক কর্তাদের আশঙ্কা, এক বার প্রত্যাহার করা হলে ওই বাহিনী আর জঙ্গলমহলে মোতায়েন না-ও করতে পারে কেন্দ্র। সে ক্ষেত্রে গোটা জঙ্গলমহল অরক্ষিত হয়ে যাবে।
কিন্তু রাজ্য তো দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করছে যে জঙ্গলমহল মাওবাদীদের প্রভাবমুক্ত। তার পরেও কেন বাহিনী? প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তার ব্যাখ্যা, এ রাজ্যে মাওবাদীদের গতিবিধি রোধ করা গেলেও প্রতিবেশী রাজ্যে তা রয়েই গিয়েছে। বাহিনী না থাকলে সেখান থেকে মাওবাদীরা এ রাজ্যে ঢুকে পড়তে পারে। ফলে নতুন করে উপদ্রবের আশঙ্কা থেকেই যায়। ওই কর্তা বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ডে মাওবাদীদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। ভোটের সময় এ রাজ্যে ঢুকে তারা গোলমাল করতে পারে। এমনকি, যে নাশকতা সমস্যা থেকে এ রাজ্য এখন মুক্ত, তা-ও ফের ফিরে আসতে পারে।’’
অন্য দিকে দার্জিলিঙে থাকা তিন কোম্পানি বাহিনীও প্রত্যাহার করতে চেয়েছিল মন্ত্রক। তাতেও আপত্তি রাজ্যের। সূত্রের দাবি, আপাতত সেখান থেকে বাহিনী প্রত্যাহার না করার বার্তা দিয়েছে কেন্দ্র।