মোর্চা নেতৃত্বের সঙ্গে কথাবার্তা শুরু হয়েছে তৃণমূলের। ছবি: সংগৃহীত।
দার্জিলিং লোকসভা আসনে এ বার দলের প্রতীকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায় তৃণমূল। দলের তরফে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাকে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মোর্চা অবশ্য চাইছে, নির্দল কোনও প্রার্থীকে তাদের সঙ্গেই সমর্থন করুক তৃণমূল।
পাহাড়ে মোর্চা সঙ্গ ছেড়ে দেওয়ায় এ বারের লোকসভা ভোটে বিজেপির লড়াই কঠিন। এই অঙ্ক থেকেই এ বার এই আসনটি পেতে মরিয়া লড়াই দিতে চায় তৃণমূল। সেইমতোই মোর্চা নেতৃত্বের সঙ্গে কথাবার্তা শুরু হয়েছে তৃণমূলের। মোর্চাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দার্জিলিঙে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকেই দলীয় প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাতে চায় রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূল সূত্রে খবর, জোট বেঁধে লড়াই করতে রাজি হলেও তাদের প্রতীক নিয়ে আপত্তি রয়েছে মোর্চার। বিজেপিকে হারাতে দলীয় বৃত্তের বাইরে থাকা কাউকে মোর্চা প্রার্থী করতে চায়। সে ক্ষেত্রে তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়েই সেই প্রার্থীকে সমর্থন করবে তারা। মোর্চা নেতা বিনয় তামাং বলেন, ‘‘কিছু বিষয়ে কথা হয়েছে। আরও আলোচনা হবে।’’
তৃণমূল অবশ্য দলের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ব্যাপারে এখনও অনমনীয় রয়েছে। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘পাহাড়ের আসনটি আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এখনও অনেক আলোচনা হবে।’’ রাজনৈতিক শিবিরের ধারণা, পাহাড়ের আবেগ যে স্বতন্ত্র, তা মাথায় রেখেই মূল ধারার থেকে কিছু আলাদা থাকতে চায় মোর্চা। তৃণমূলের প্রতীকে লড়াই করলে জনমানসে সেই স্বাতন্ত্র নিয়ে সংশয় তৈরি হতে পারে। তাই স্থানীয় প্রার্থী ও দলহীন প্রতীক নিয়েই এগোতে চাইছেন মোর্চা নেতারা। প্রার্থী ও প্রতীক নিয়ে অবস্থানে তাঁদের এই অঙ্কের কথা একান্ত আলোচনায় স্বীকার করছেন মোর্চার শীর্ষ নেতৃত্বও।
আরও পড়ুন: ক্ষতিপূরণ যেন হাতছাড়া না হয়, স্বামীর মৃত্যু শোকের মধ্যেই দেওরকে বিয়েতে চাপ!
দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের ক্ষেত্রে পাহাড়ের তিনটি বিধানসভা আসন বরাবর গুরুত্বপূর্ণ থেকেছে। জয়ী যে দলই হোক না কেন, পাহাড়ি দলের সমর্থনই নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বারও ২০১৪ সালের মতো পাহাড়ের সেই শক্তি হিসাবে রয়েছে মোর্চা। এবং মোর্চার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভাল হওয়ায় এ বার দার্জিলিং আসনটি বিজেপির হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার আশা করছে তৃণমূল। তবে সংগঠনের অপসারিত সভাপতি বিমল গুরুঙের দিকে থাকা একটা ছোট অংশ এখনও মোর্চার এই মূল স্রোতের সঙ্গে পা মেলায়নি। এবং সামগ্রিক ভাবে পাহাড়ের তিনটি বিধানসভা আসনে সর্বভারতীয় দল হিসাবে বিজেপির একটা প্রভাব থাকতে পারে বলেও মনে করেন মোর্চার অনেকে। তাই পাহাড়ের প্রতিনিধি বাছাইয়ে সতর্ক থাকতে কৌশলী অবস্থান নিতে চান মোর্চা নেতারা।