পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা। ফাইল চিত্র
কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ড। নিঝুম দুপুরে হাসপাতালের বারান্দায় পাতা চেয়ারে ১০৬ নম্বর ঘরের দরজার পাশে বসে অপেক্ষা করছিলেন মাধবী সাহা। প্রায় তিন মাস হল এখানে অসুস্থ হয়ে ভর্তি নবদ্বীপের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পুণ্ডরীকাক্ষ ওরফে নন্দ সাহা। তাঁর দিদি মাধবী। এখন এটাই তাঁর নিত্য দিনের রুটিন। কারণ, মাঝের কয়েকটা দিন বাদ দিলে সেই ২৮ ডিসেম্বর থেকে এই উডবার্ন ওয়ার্ডই পুণ্ডরীকাক্ষ সাহার অস্থায়ী ঠিকানা। ভাইয়ের জন্য এখানে থাকতে হয় তাঁকে।
ইতিমধ্যে দরজায় কড়া নাড়ছে লোকসভা ভোট। নিজের গড়ে তিনি এ বার অনুপস্থিত এবং নির্বাচনের নবদ্বীপে তৃণমূল নন্দ সাহাকে ভীষণ ভাবে চাইছে। গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে তাঁকে ছাড়া ভোট হয়নি নবদ্বীপে। শারীরিক ভাবে অনুপস্থিত হয়েও পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা ভোটে কতটা প্রাসঙ্গিক তার প্রমাণ হাতেনাতে মিলল গত রবিবার নবদ্বীপে তৃণমূলের প্রথম নির্বাচনী কর্মী সম্মেলনেই।
বিকেল পাঁচটা নাগাদ নবদ্বীপ তাঁত কাপড় হাটে রানাঘাটের তৃণমূল প্রার্থী রূপালী বিশ্বাসের সমর্থনে বক্তৃতা দিতে উঠে তৃণমূলের নদিয়া জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত নন্দ বাবুর অসুস্থতার প্রসঙ্গ চোলেন। উপস্থিত কর্মী সমর্থকেরা উদগ্রীব হয়ে ওঠেন। গৌরবাবু তাঁদের আশ্বস্ত করে জানান, নন্দ সাহা দ্রুত সুস্থ হয়ে তাঁদের মধ্যে ফিরবেন। পরবর্তী কয়েক ঘণ্টা ধরে তৃণমূলের নির্বাচনী সভায় প্রত্যেকের বক্তৃতায় উঠে এসেছিল নন্দ বাবুর প্রসঙ্গ।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পুণ্ডরীকাক্ষ সাহার শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নিচ্ছেন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরাও। কারণ, তাঁরাও জানেন নন্দ সাহা উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতি—দু’টির উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করে। মাধবী সাহা বলেন, “ ও এখন অনেকটাই সুস্থ। নিউরোলজিস্ট ওকে ছুটি দিলেও ফিজিওথেরাপিস্ট চাইছেন আরও কিছু দিন বিশ্রাম নিক। ভোট সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে ওকে এই মুহূর্তে যুক্ত হতে নিষেধ করেছেন ডাক্তারবাবুরা। ’’ আরও বলেন, “ কিছুতেই ও এখানে থাকতে চাইছে না। ভোট প্রচারে নামবে বলে ছটফট করছে সব সময়।’’