প্রতীকী ছবি।
পাহাড়ের আবহাওয়ার মতোই রোজ বদলাচ্ছে পাহাড়ের রাজনৈতিক সমীকরণ। রাজনীতিতে শেষ বলে যে কিছু হয় না, মঙ্গলবার বিকেলে সেটা ফের প্রমাণ করে দিলেন জিএনএলএফ ও মোর্চার বিমল গুরুংপন্থীরা। যে বিমল গুরুংয়ের জন্য পাহাড়ে উঠতে পারেননি সুবাস ঘিসিং, সেই গুরুংপন্থীদের সঙ্গে একজোট হয়ে দার্জিলিঙে বিজেপি প্রার্থীকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিলেন ঘিসিংপুত্র মন। এবং সে কথা দু’পক্ষ দিল্লিতে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করে এ দিন জানিয়েছে।
এ দিন দিল্লিতে বৈঠক করেন গুরুংপন্থী মোর্চা ও জিএলএলএফ নেতারা। জিএনএলএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লিতে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সোম ও মঙ্গলবার দফায় দফায় বৈঠক করেছেন জিএনএলএফ সভাপতি মন ঘিসিং। সেখানেই দুই দলের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। এর পাশাপাশি বিজেপির সঙ্গেও কথা হয় দু’পক্ষের। গুরুংপন্থী মোর্চা নেতারা সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার ব্যাপারে আপত্তি তোলেন। তবে সত্যপাল মহারাজে তাঁদের আপত্তি নেই, সেটাও জানিয়ে দেন। মোর্চা নেতা বিনু সানদাস বলেন, ‘‘সত্যপাল মহারাজ পাহাড়ের মানুষের জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। তাঁর নিজস্ব ভোটব্যাঙ্কও আছে।’’ সত্যপালকে নিয়ে তাদেরও আপত্তি নেই, জানায় জিএনএলএফ-ও। জিএনএলএফ মুখপাত্র নীরজ জিম্বা জানান, যত শিগগির সম্ভব বিজেপির হয়ে প্রচারে নামবেন তাঁরা। মোর্চার সঙ্গে যৌথ কমিটি গড়ে পাহাড় ও সমতলে মিছিল-সভা করার কথাও ঘোষণা করেছেন জিম্বা।
জানুয়ারির শেষে যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ে যান, তখনও বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন নীরজ। বলেছিলেন, তাঁরা মমতাকে ভরসা করেন, বিজেপিকে নয়। সম্প্রতি তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী জোট তৈরির চেষ্টাতেও ছিলেন তাঁরা। তার পরে গত দু’দিন ধরে দফায় দফায় তাঁদের বৈঠক হয় বিজেপি নেতাদের সঙ্গে। যার ফল এ দিনের সাংবাদিক বৈঠক। নীরজ বলেন, ‘‘তৃণমূল পাহাড়ে বিভেদ তৈরি করতে চাইছে। মোর্চার প্রার্থীকে নিজেদের প্রতীকে নামিয়ে সেই চেষ্টাই করছে তারা। তাই জোটবদ্ধ হয়ে বিজেপিকে সমর্থন করছি।’’ বিমলপন্থী মোর্চার কার্যকারী সভাপতি লোকসন লামা বলেন, ‘‘পাহাড়ে বিনয়দের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সমস্ত দলকে একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছি আমরা।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও বলেন, ‘‘পাহাড়ে গণতন্ত্র বিপন্ন। পাহাড়ের স্থানীয় দলগুলি সেটা বুঝতে পেরেই জোট করেছে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
নতুন সমীকরণকে পাত্তা না দিয়ে বিনয় অবশ্য বলেন, ‘‘কয়েক জন নেতা ছাড়া পাহাড়ে জিএনএলএফের কোন অস্তিত্ব নেই। তাই ওরা কাদের সঙ্গে জোট করল তা নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যথা নেই।’’ তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন দেখেছে। তাই ওরা আর অন্য কিছু চায় না।’’