রাজ্যে নিযুক্ত বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক। ফাইল চিত্র।
চতুর্থ দফার ভোটে কেতুগ্রামের একটি বুথের ছাপ্পা ভোটের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে দেখা গিয়েছিল, ইভিএম পর্যন্ত এগিয়ে দেওয়া হচ্ছে ভোটারদের। কোথায় ভোট দিতে হবে, তা-ও দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি বয়স্কদের হয়ে ভোট দিতেও দেখা যায় কয়েক জন যুবককে।
আর পাঁচ জনের মতোই বিষয়টি নজরে এসেছিল রাজ্যে নিযুক্ত বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েকের। ওই বুথে ঠিক কী ঘটেছিল? ভাইরাল ভিডিয়োতে তিনি যা দেখেছিলেন, তার সঙ্গে বুথের ভিতরে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ মিলছে কি না, তা খতিয়ে দেখেন নায়েক। সেখানেই তিনি থেমে থাকেননি। নজিরবিহীন ভাবে জেলার নির্বাচনী আধিকারিকের পরামর্শ ছাড়াই তিনি ওই বুথে পুর্নর্নিবাচনের সুপারিশও করেন। এবং শেষ পর্যন্ত ওই কেন্দ্রে আগামী ১২ মে পুনরায় ভোটও হতে চলেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়ো দেখে ফের ভোটের সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে বিরল।
কিন্তু বিষয়টি এত সহজ ছিল না। বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের কেতুগ্রামের ৫২ নম্বর বুথে স্কুটিনির পর, মাইক্রো অবজারভারের কাছে ওই কেন্দ্রের রিপোর্ট তলব করা হয়। কিন্তু তিনি এই ঘটনা নিয়ে তেমন কোনও সুপারিশ করেননি। পরে জেলা নির্বাচন আধিকারিকও পু্নর্নির্বাচনের পক্ষেও মতামত দেননি। হাল ছাড়েননি নায়েক।
আরও পড়ুন: প্রমাণ দিন, না হলে কান ধরে ওঠবোস করতে হবে, মোদীর কয়লা মাফিয়া মন্তব্যে চ্যালেঞ্জ মমতার
দু’বার রিপোর্ট পাঠান। জেলা থেকে প্রথমে যে রিপোর্ট এসেছিল, তার সঙ্গে দ্বিতীয় রিপোর্টের বিশেষ পার্থক্য ছিল না। তখন সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেন অজয়। দেখা যায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি অনেকটাই মিল রয়েছে। সেই সূত্রেই অজয় ওই বুথটিতে পুর্ননির্বাচনের সুপারিশ করেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পূর্ব বর্ধমান জেলায় অবস্থিত হলেও কেতুগ্রাম বিধানসভা বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। তাতে দেখা যায়, এক মহিলা ভোটদান কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। সাদা জামা-কালো প্যান্ট পরা এক ব্যক্তি ওই মহিলার হয়ে ভোট দিয়ে দিলেন। মাঝবয়সি এক পুরুষ ভোটরকে দেখিয়ে দেওয়া হয়, কোথায় ভোট দিতে হবে? এক বৃদ্ধাকেও ধরে ইভিএম-এর কাছে নিয়ে যাওয়া হল। দিয়ে দেওয়া হল ভোটও। বিরোধীরা অভিযোগ করে এ সবই পোলিং এজেন্ট এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনেই হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অজয় নায়েকের তৎপরতায় ফের ভোট হচ্ছে ওই বুথে।