থমকে: রত্নার প্রচার-গাড়ি থামিয়ে অভিযোগ স্থানীয়দের। মঙ্গলবার পান্ডুয়ার ভোটগ্রামে। —নিজস্ব চিত্র।
ভোটগ্রামে সূর্য তখন মধ্যগগনে। শাসকদলের প্রার্থী রত্না দে নাগের হুডখোলা জিপ থমকাল গ্রামের মাঝে। ঘিরে ধরলেন মহিলারা। পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে মঙ্গলবার তাঁদের প্রশ্নের মুখে পড়লেন এলাকার বিদায়ী সাংসদ তথা তৃণমূলের হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের চিকিৎসক প্রার্থী।
এক গৃহবধূর প্রশ্ন, ‘‘আমরা তো গতবার আপনাকে ভোট দিয়েছি, দিদি। আপনি জলের ব্যবস্থাটুকু করে দিলেন না? সমস্যার কথা কি আপনার অজানা?’’ রুবি মিত্র নামে আর এক মহিলা বলেন, ‘‘দিনের পর দিন জলের অভাবে ভুগতে হচ্ছে। গরমে সমস্যা বাড়ে। গ্রামে তিনটি নলকূপে মাঝেমধ্যে নোংরা জল ওঠে। আয়রন মেশানো লাল জল ব্যবহার করা যায় না। আবার গরম পড়ে গেল। ফের ভুগতে হবে।’’
গত লোকসভা ভোটের আগে পান্ডুয়ার এই ভোটগ্রামে প্রচারে এসে রত্নাদেবী পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু ভোটে জেতার পরেও তিনি কথা না-রাখায় সমস্যার সমাধান হয়নি বলে অভিযোগ। এ দিন রত্নাদেবী অবশ্য ওই মহিলাদের জানান, জলের পাম্প বসানোর জন্য তিনি গ্রামে জায়গা ঠিক করতে বলেছিলেন। কিন্তু সেই কাজ হয়নি। সেই কারণেই পাম্প বসানো যায়নি। তিনি আশ্বাস দেন, ‘‘আপনারা আগে জায়গা ঠিক করে দিন। পাম্প বসানো অবশ্যই হবে।’’
আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভকারীরা ক্ষান্ত হন। পরে সংবাদমাধ্যমকে রত্নাদেবী বলেন, ‘‘ওই গ্রামে জায়গা পাওয়া গেলেই জলের পাম্প বসানো হয়ে যেত। গ্রামবাসীরা বিষয়টি বুঝেছেন। আশা করছি, ভোট মিটলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’’
এ দিন পান্ডুয়া ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় প্রচার চালান রত্না। সকাল ন’টায় জামগ্রাম থেকে যাত্রা শুরু হয়। কখনও হুডখোলা জিপে, কখনও টোটোয় চড়ে জনসংযোগ করতে দেখা যায় তাঁকে। সঙ্গে ছিল মোটরবাইক-মিছিল। রত্নাদেবীর সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী তথা ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মেহবুব রহমান, পান্ডুয়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি আনিসুল ইসলাম-সহ স্থানীয় নেতারা। জামগ্রাম-মণ্ডলাই পঞ্চায়েতের চা-গ্রাম, মাগুড়া, বেড়ুই, থৈপাড়া হয়ে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ ভোটগ্রামে ঢোকেন রত্না। সেখানেই প্রমীলা-বাহিনীর প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাঁকে।
পরে দলের জেলা পরিষদ সদস্য শিল্পা নন্দীর বাড়িতে স্থানীয় বৃদ্ধবৃদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলেন রত্নাদেবী। গৌরী ধারা, দুর্গা প্রামাণিক, পুষ্প মালিকেরা তাঁর সঙ্গে কার্যত আড্ডায় মাতেন।