West Bengal News

কমিশনে গুচ্ছ অভিযোগ বিজেপি-বাম-কংগ্রেসের, বৈঠক সেরে প্রতিক্রিয়া দিল না তৃণমূল

কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষ হওয়ার পরে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘আগে সিপিএম সায়েন্টিফিক রিগিং করত। এখন তৃণমূল সর্বাত্মক রিগিং করে।’’ এই পরিস্থিতি বদলানোর দাবিই কমিশনের ফুল বেঞ্চের কাছে জানানো হয়েছে বলে বিজেপি জানিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ১৮:১৪
Share:

রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক করল নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ।

ভোটের দামামা কার্যত বাজিয়ে দিয়ে কলকাতায় ৯টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করল কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। আর বৈঠক সেরে বেরিয়েই বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস প্রায় এক সুরে জানাল— বাংলায় অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। বাংলার শাসক দল তৃণমূল কিন্তু মুখ খোলেনি বৈঠকের পরে। ‘কমিশন ধৈর্য ধরে শুনেছে আমাদের কথা’— বিধানসভা চত্বরে এইটুকু বলেই প্রসঙ্গে ইতি টেনেছেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

পাঁচটি জাতীয় দল এবং চারটি আঞ্চলিক বা রাজ্য দলের প্রতিনিধিদের এ দিন বৈঠকে ডেকেছিল কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা-সহ কমিশনের শীর্ষ পদাধিকারীরা ওই বৈঠকে ছিলেন।

তৃণমূলের তরফে বৈঠকে যোগ দেন সুব্রত বক্সি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম এবং তাপস রায়। বৈঠক সেরে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনও কথাই বলেননি তাঁরা। তবে কমিশনের ফুল বেঞ্চকে তাঁরা কী জানিয়েছেন এবং কোন কোন দাবি জোর দিয়ে পেশ করেছেন, বিজেপি, কংগ্রেস এব সিপিএমের প্রতিনিধিরা তা বিশদে জানিয়ে যান।

Advertisement

মুকুল রায়, সায়ন্তন বসু, জয়প্রকাশ মজুমদার-সহ মোট চার জন বিজেপির তরফে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। মিনিট দশ-বারোর কথোপকথন শেষে বাইরে বেরিয়ে জয়প্রকাশ জানান, এ বারের লোকসভা নির্বাচনে বাংলার সবক’টি ভোটকেন্দ্রের ভিতরে ও বাইরে সিসিটিভি লাগানোর দাবি জানানো হয়েছে বিজেপির তরফে। সেই সিসিটিভির লাইভ ফুটেজ রাজনৈতিক দলগুলিকে এবং সংবাদমাধ্যমকে দেওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: নিশানায় বেকারত্ব রিপোর্ট! মোদীকে হিটলারের সঙ্গে তুলনা রাহুলের, জবাবে ‘মুসোলিনি’ কটাক্ষ বিজেপির

নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চকে বিজেপি জানিয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটারের সংখ্যা বিপুল। তালিকা সংশোধন করে সব ভুয়ো ভোটারকে বাদ দিতে হবে এবং ভোটের অন্তত ১৫ দিন আগে বাংলাদেশ সীমান্ত পুরোপুরি সিল করে দিতে হবে— দাবি বিজেপির। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ভোটের অনেকটা আগেই রাজ্যে পাঠাতে হবে, সর্বত্র কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারিতে ভোট করাতে হবে এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দায়িত্ব রাজ্যের প্রশাসন বা পুলিশের হাতে দিলে চলবে না— এই দাবিও এ দিন পেশ করেছেন বিজেপি নেতারা। কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষ হওয়ার পরে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘আগে সিপিএম সায়েন্টিফিক রিগিং করত। এখন তৃণমূল সর্বাত্মক রিগিং করে।’’ এই পরিস্থিতি বদলানোর দাবিই কমিশনের ফুল বেঞ্চের কাছে জানানো হয়েছে বলে বিজেপি জানিয়েছে।

আরও পডু়ন: লোকসভার ফল ত্রিশঙ্কু! এনডিএ ২৫২, ইউপিএ ১৪৬, অন্যান্যরা ১৪৫, ইঙ্গিত সমীক্ষায়

প্রদেশ কংগ্রেস সহ-সভাপতি দেবব্রত বসু জানান যে, সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানানো হয়েছে কংগ্রেসের তরফে। সিপিএমের তরফে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন রবীন দেব এবং সুখেন্দু পাণিগ্রাহী। প্রতিবেশী রাজ্যগুলি থেকে দুষ্কৃতীদের এনে উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম-সহ বিভিন্ন জেলায় ভোট লুঠের চেষ্টা হতে পারে বলে সিপিএমের তরফে আশঙ্কা করা হয়েছে। তাই বাংলার যে সব জেলা বিহার-ঝাড়খণ্ড লাগোয়া, সেই সব জেলায় ভোট করাতে হবে বিহার-ঝাড়খণ্ডে ভোটের দিনেই— এমন দাবিও সিপিএমের তরফে তোলা হয়েছে।

তৃণমূল ঠিক কী দাবি তুলেছে, নেতৃত্ব তা নিয়ে সরকারি ভাবে মুখ খোলেননি। বিধানসভা চত্বরে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আমরা আমাদের কথা বলেছি। ওঁরা ধৈর্য ধরে শুনেছেন। আমরা চিঠি দিয়েছি। ওঁরা দেখুন।’’

(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement