আসানসোলে তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন। ফাইল চিত্র।
নিজের কেন্দ্রে নির্বাচনের দিন বেলায় বেড-টি পাওয়ায় ঘুম ভেঙেছিল দেরিতে। সে কারণেই নাকি গোলমালের খবর পাননি মুনমুন সেন। বিকেলে অবশ্য তিনি বললেন, ‘‘একটু আধটু হিংসা সব জায়গাতেই হয়।’’ তবে এখানেই শেষ নয়। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে লাইভ আলোচনায় বসেও মেজাজ হারান মুনমুন। তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হতেই আলোচনা ছেড়ে বেরিয়ে যান মুনমুন। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আই উইল স্যু ইউ, আই উইল স্যু ইউ, আই উইল স্যু ইউ।’’ একই সঙ্গে মানহানির মামলা করার হুমকিও দেন তিনি। মাইক খুলে ফেলে মুনমুন বলেন, ‘‘খুব বড় সাংবাদিকরা আমার কাছে আসেন। ইংল্যান্ড থেকেও আমার কাছে আসেন সাংবাদিকরা। ওঁরা আমার সঙ্গে এ ভাবে কথা বলেন না। কেউ বিজেপির লোক হলে বিজেপির কাছে যাক। আমার কাছে এসে কোনও লাভ নেই।’’
তাঁরই নির্বাচনী কেন্দ্র আসানসোল। সেখানে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গে অভিযুক্ত তাঁরই প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়।বুথে ঢুকে প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ার জন্য বাবুলের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বাবুল অবশ্য তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছেন কমিশনে। দিনের শেষে সব মিলিয়ে প্রায় হাফ ডজন কর্মী আহত আর গ্রেফতার একশোরও বেশি। নিজের কেন্দ্রে বিজেপি ও তৃণমূল সমর্থকদের সংঘর্ষের খবর অবশ্য মুনমুন পেলেন সংবাদসংস্থার প্রতিনিধিদের কাছে। আর দিনের শেষে সব শুনে বললেন, ‘‘একটু আধটু হিংসা তো সব জায়গাতেই হয়। আমি তো সিনিয়রদের সঙ্গে বসিনি এখনও। ওঁদের সঙ্গে বসলেই জানতে পারবো, কখন আর কোথায় হিংসা হয়েছে। আগের থেকে হিংসা তো এখন অনেক কম হয়।’’
চতুর্থ দফার ভোটে সকাল থেকেই উত্তপ্ত ছিল আসানসোল। তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছিল বিভিন্ন জায়গা থেকে। শুধু দিনের শেষ নয়, দিনের শুরুতেও আসানসোলের গণ্ডগোল নিয়ে খুব একটা ওয়াকিবহাল ছিলেন না মুনমুন। তার জন্য অবশ্য সময়মতো ‘বেড টি’ না পাওয়াকেই দায়ী করেছিলেন তিনি। তাঁর কেন্দ্রে হিংসা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন,‘‘আজ বেড টি দিতে দেরি করেছে। তাই অনেক দেরিতে ঘুম ভেঙেছে আমার। কী ঘটেছে সত্যিই জানি না।’’
আরও পড়ুন: ‘বেলা করে বেড-টি দিল যে!’ দেরিতে ঘুম ভাঙায় গোলমালের খবর পাননি মুনমুন
তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়-র গাড়ি ভাঙার অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিরক্তি প্রকাশ করে মুনমুন বলেন, ‘‘দয়া করে ওঁর নাম মুখে আনবেন না। তাহলে আর কথাই বলব না আমি।’’
আরও পড়ুন: বুথে ঢুকে ‘বচসা’, অভিযুক্ত বাবুল
‘বেড টি’ মন্তব্য নিয়ে অবশ্য পরে কিছুটা সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করেন মুনমুন নিজেই। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, প্রচারের ধকল সামলাতে গিয়ে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি দশটায় ঘুম থেকে উঠে ব্রেকফাস্ট সেরে এগারোটায় কাজে বেরিয়ে পড়েছিলাম। তার মানে এই নয় যে আমার ছেলেমেয়েরা লড়াই করছে আর আমি বিছানায় শুয়ে চা খাচ্ছি।’’