সংখ্যালঘু ভোটই লক্ষ্য বিজেপির

এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রার্থীর নাম ঘোষণার পরেই জেলা স্তরের এক বিজেপি নেতা দলের অন্দরে সংখ্যালঘু ভোট পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৯ ১০:৪৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

ঝুলি কিছুটা ভরেছিল দেড় বছর আগে উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে। গত বছর পঞ্চায়েত ভোটে প্রাপ্তি আরও বাড়ে। তাই এ বার ওই কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটের জন্য বিশেষ নজর দিচ্ছে বিজেপি। দলীয় নেতৃত্বের একাংশ স্বীকার করেছেন, এখানে ২৭ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটের যতটা সম্ভব পেতে তাঁরা যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন।

Advertisement

এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রার্থীর নাম ঘোষণার পরেই জেলা স্তরের এক বিজেপি নেতা দলের অন্দরে সংখ্যালঘু ভোট পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু অন্যেরা তাঁকে হতাশ হতে নিষেধ করেন। তাঁদেরই এক জন বলেন, ‘‘এই কেন্দ্রে সংখ্যালঘুরা আমাদের প্রতি আস্থা রাখতে শুরু করেছেন। পঞ্চায়েত ভোটের পরই বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এ বারও হতাশ হতে হবে না, আমরা নিশ্চিত।’’ প্রার্থী জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সংখ্যালঘুদের নিয়ে রাজনীতি করছে অন্য দল। বিজেপি ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ’-এর কথা বলে। বহু সংখ্যালঘু মানুষ সঙ্গে আছেন।’’

সাংসদ সুলতান আহমেদের মৃত্যুর পরে বছর দেড়েক আগে উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন হয়। তার প্রস্তুতির জন্য বিজেপি যে সব কর্মিসভা করে, তাতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, সংখ্যালঘু ভোটের আশা না-করাই ভাল। কিন্তু উপ-নির্বাচনে বিজেপি ভাল ফল করে। তৃণমূল প্রার্থী সাজদা আহমেদের কাছে বিজেপি প্রার্থী অনুপম মল্লিক প্রায় পৌনে পাঁচ লক্ষ ভোটে হেরেছিলেন। কিন্তু অনুপম তিন লক্ষেরও বেশি ভোট পেয়ে সিপিএমকে সরিয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। প্রাপ্ত ভোটের মধ্যে সংখ্যালঘু ভোটও ছিল বলে বিজেপি নেতাদের দাবি।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পঞ্চায়েত নির্বাচনেও জেলায় কয়েকটি পঞ্চায়েত দখল করে বিজেপি। বাকি পঞ্চায়েতের সিংহভাগে তারাই হয়ে দাঁড়ায় তৃণমূলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। যে সব পঞ্চায়েতে বিজেপি জিতেছে বা দ্বিতীয়, তার অনেকগুলিই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায়। দলের জেলা নেতৃত্বের একটি অংশ মনে করছেন, শাসকদলের বিরুদ্ধে নানা কারণে যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে, তা ছড়িয়েছে সংখ্যালঘুদের মধ্যেও। তারই প্রতিফলন ঘটছে ভোটে। কংগ্রেস বা বামেদের সঙ্গে তাদেরও ঝুলি ভরছে।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন দলীয় সমাবেশে নিয়ম করে হাজির করানো হচ্ছে দলের সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য ও স্থানীয় নেতৃত্বকে। তাঁদের দিয়ে বক্তৃতাও পেশ করানো হচ্ছে। সম্প্রতি উলুবেড়িয়ার বাগান্ডায় বিজেপির সমাবেশে বক্তৃতা পেশ করতে আসেন উত্তরপ্রদেশের উপ-মুখ্যম‌ন্ত্রী কেশবপ্রকাশ মৌর্য। সেই সমাবেশে দলের সংখ্যালঘু মোর্চার একাধিক নেতা হাজির ছিলেন। ‘তিন তালাক’ রদে যিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন, সেই ইশরাত জাহানকে হাজির করায় বিজেপি। যাতে সংখ্যালঘুদের আস্থা অর্জন করা যায়। ইশরাত বক্তৃতাও পেশ করেন। এমনকি, স্থানীয় মসজিদে আজানের সময়ে ইসরাতের পরামর্শেই নেতারা বক্তৃতা বন্ধ করে দেন।

শুধু মঞ্চেই নয়, হাওড়া গ্রামীণ এলাকার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের অঙ্গ হিসেবে বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’ও খোলা হয়েছে। দলের জেলা কমিটির নেতারা জানিয়েছেন, শাসকদলের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের যে অভিযোগ উঠেছে তাতে বহু মানুষ ক্ষুব্ধ। তাঁদের মধ্যে আছেন সংখ্যালঘুদের বড় অংশও। অন্য দিকে কংগ্রেস ও সিপিএমকে সংখ্যালঘুদের এই বিক্ষুব্ধ অংশ বিকল্প হিসাবে ধরছেন না। সংখ্যালঘুদের ভোটের একটা অংশও যদি বিজেপিকে সমর্থন করে, লড়াই জমে যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement