ফেসবুকে ছড়িয়েছে এ ধরনের মিম।
আছেন ব্যোমকেশ, আছেন ফেলুদা। হাজির শবর-নন্দও। বাঙালির ‘আইকন’ বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদ জানাতে ভোটের বাজারে সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজির সকলেই।
জনপ্রিয় ছবির নানা দৃশ্য ব্যবহার করে তৈরি হওয়া মিম মঙ্গলবার রাত থেকেই ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়েছিল। তা চলেছে বুধবার দিনভরই। ফেসবুকে ছড়ানো মিমে দেখা যাচ্ছে অজিত ব্যোমকেশকে প্রশ্ন করছে, ‘‘এতকিছু থাকতে হঠাৎ ওরা বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙতে গেল কেন?’’ ব্যোমকেশের উত্তর, ‘‘বিধবা বিবাহ কে চালু করেছিলেন মনে আছে অজিত?’’
তবে কেবল অন্য ছবির দৃশ্যই নয়, বিদ্যাসাগরের নিজের লেখাও শেয়ার করেছেন অনেকে। ‘বাঙালি’ টিনটিনের কার্টুন করে পরিচিত হওয়া মহফুজ আলমের কার্টুনে দেখা যাচ্ছে বিদ্যাসাগর মূর্তির দিকে পাথর ছুড়ছে একদল ভুতুড়ে চেহারা। সেখানে বর্ণপরিচয়ের উক্তি উদ্ধৃত করে লেখা, ‘‘রাম বড় সুবোধ। রাম কখনও কোনও মন্দ কর্ম করে না।’’ মহফুজ বলছেন, ‘‘ভুতুড়ে চেহারা করার উদ্দেশ্য এটা বোঝানো যারা এমন কাজ করতে পারে তাদের আত্মা নেই। হৃদয় নেই।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
শিল্পী অনিকেত মিত্রর আঁকা ছবিও ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে আগুন। সেই সঙ্গে জ্বলছে সামনে একটি হাতে ধরা একটি পেন্সিলও। অনিকেতের কথায়, ‘‘বিদ্যাসাগর কেবল বাঙালিরই আইকন নন, তিনি গোটা দেশ, গোটা জাতির আইকন। আর এই আক্রমণও কোনও একটি কলেজ নয়, পুরো শিক্ষাব্যবস্থার উপরে আঘাত।’’
বিদ্যাসাগরের সঙ্গে মিমে এসেছেন রবীন্দ্রনাথও। রবীন্দ্রনাথ ও বিদ্যাসাগর— দু’জনের ছবি দেওয়া মিমে রবীন্দ্রনাথের ছবির তলায় লেখা, ‘‘অসমে আমার মূর্তি ভেঙেছিল ওরা। আজ আপনার মূর্তি ভাঙল ওরা।’’ বিদ্যাসাগরের ছবির তলায় লেখা, ‘‘ঠাকুর, ওদের তো কোনও দোষ নেই, ওরা তো আমাকে চেনেই না।’’
মঙ্গলবারের ঘটনার সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে ভোটও। একটি কার্টুনে দেখা যাচ্ছে ভোট দিতে গিয়ে একজন ভোটার দেখতে পাচ্ছেন বর্ণপরিচয় হাতে দাঁড়িয়ে থাকা বিদ্যাসাগরকে। সঙ্গে লেখা, ‘ব-য়ে বিদ্যাসাগর। ভ-য়ে ভোট।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো আরেকটি ছবিতে সরাসরিই বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। সঙ্গে লেখা, ‘বিদ্যাসাগর জবাব দেবেন।’
কেবল প্রকট নয়, অনুচ্চারিত রাজনীতির বার্তাও আছে বাঙালির এই ব্যঙ্গ-বাণে। সে জন্যই ফেসবুকে ভাইরাল একটি বাক্য, ‘‘স্কুলের পরীক্ষায় বিদ্যাসাগর এবং গরুর মধ্যে যারা গরুকে বেছে নিত, তারাই বড় হয়ে বিজেপি হয়েছে!’’