শালবনিতে কর্মিসভায় মানস ভুঁইয়া। নিজস্ব চিত্র
মানস ভুইঁয়ার চোখে তাঁর দলনেত্রী ছিলেন ‘বাংলার মা’। এক ধাপ এগিয়ে এ বার নেত্রীকে ‘এ যুগের দুর্গা’ বললেন তিনি।
কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘বাংলার মা’ বলে সম্বোধন করেছিলেন মানস। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শুক্রবার শালবনির জলহরিতে কর্মিসভায় বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ যুগের দুর্গা। তিনিই মহিষাসুরকে বধ করেছেন। মহিষাসুর কে? মার্ক্সবাদী সিপিএম পার্টি।’’
মানসের মুখে মমতার এই প্রশংসা শুনে কংগ্রেস নেতাদের একাংশ মনে করিয়ে দিতে চাইছেন সবংয়ের তৃণমূল কর্মী খুনের পর তাঁর ভূমিকার কথা। ওই খুনে তাঁর নাম জড়ানোর পর মানস বলেছিলেন, ‘‘পুলিশ সুপার ভারতী, দু’বেলা করছেন মা মমতার আরতি। কারণ, ভারতী জানেন আরতি না করলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে জমিদার থেকে জমাদার হয়ে যেতে হবে। তবে মমতা আর ভারতীর রক্তচক্ষুকে আমরা ভয় করি না।’’ সবংয়ে তৃণমূলকর্মী খুনের ঘটনায় চার্জশিট থেকে নাম বাদ পড়েছে মানসের। রাজ্যসভার সাংসদ মানস এখন লড়ছেন লোকসভার ভোটে। পাশের কেন্দ্র ঘাটালে আবার বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘ভারতী ঘোষ একসময় মুখ্যমন্ত্রীকে জঙ্গলমহলের মা বলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর বেশি প্রশংসা করার আগে ভারতীর পরিণতির কথা মানসবাবুর মনে রাখা উচিত।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ দিন শালবনির জলহরিতে কর্মিসভায় সিপিএমের অত্যাচারের বর্ণনা দিচ্ছিলেন মানস। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমার বাড়িও তিনবার লুট করেছে সিপিএম। পুকুরে ফলিডল ঢেলে দিয়েছে। ৩৯ বছর আগের ঘটনা বলছি। সেদিন মুম্বই থেকে ফিরছিলাম। বাড়ি গিয়ে দেখলাম দরজা ভাঙা। চারিদিকে লাল পতাকা। মা বসে আছেন, চোখে জল। বাবা চেয়ারে গম্ভীর হয়ে বসে। ৫২ বিঘা জমির ধান লুট করা হয়েছিল। বাড়িতে লক্ষ্মীপুজোর ধানও ছিল না।’’ এরপরই কেঁদে ফেলেন মানস। চোখের জল মুছে ফের বক্তৃতা শুরু করেন।
পুরনো দিনের কথা মনে পড়লে এখনও মন খারাপ করে? মঞ্চ থেকে নেমে মানস বলছিলেন, ‘‘খুব মন খারাপ করে। সেই সময়ে আমার ছেলের বয়স আড়াই বছর। বাড়ির উপর কী অত্যাচারটাই না সিপিএম করেছে।’’
সরাসরি এ নিয়ে কিছু না- বললেও পরোক্ষে বিঁধেছেন বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘ভোটারদের মন টানতেও কখনও কখনও কেউ কেউ কাঁদেন।’’ মেদিনীপুরের বাম প্রার্থী বিপ্লব ভট্টের কথায়, ‘‘ছল-কৌশল করে এখন আর মানুষকে বোকা বানানো যায় না।’