সিপিএমের জেতা আসনে লোকসভায় নজর কংগ্রেসের

পরস্পরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে লড়াই করলে কোথায় কেমন সম্ভাবনা, তার প্রাথমিক পর্যালোচনা সেরে রেখেছে আলিমুদ্দিন ও বিধান ভবন। সেই প্রাথমিক হিসেবের ভিত্তিতেই রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসনদু’টিতে এ বার প্রার্থী দিতে চায় কংগ্রেস।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:১৪
Share:

সমঝোতার আলোচনা এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়নি। বার্তা বিনিময় চলছে। তবে আলোচনার বল গড়ানোর আগেই রাজ্যের দুই লোকসভা আসন ঘিরে স্নায়ুর লড়াই পেকে উঠছে সিপিএম ও কংগ্রেস শিবিরের অন্দরে!

Advertisement

পরস্পরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে লড়াই করলে কোথায় কেমন সম্ভাবনা, তার প্রাথমিক পর্যালোচনা সেরে রেখেছে আলিমুদ্দিন ও বিধান ভবন। সেই প্রাথমিক হিসেবের ভিত্তিতেই রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসনদু’টিতে এ বার প্রার্থী দিতে চায় কংগ্রেস। দু’টি আসনই এখন সিপিএমের দখলে! যার হাতে যে আসন আছে, তা তেমন ভাবে রেখেই সচরাচর যে কোনও সমঝোতা বা জোট গড়ে ওঠে। সিপিএমের জেতা আসনে কংগ্রেস লড়তে চাইলে সমঝোতা এগোবে কী ভাবে, স্বভাবতই সেই প্রশ্ন উঠছে দুই শিবিরের ভিতরেই।

পাঁচ বছর আগে চতুর্মুখী লড়াইয়ে বাংলা থেকে দু’টি আসনই পেয়েছিল সিপিএম। রায়গঞ্জ আসন দখলে রাখার জন্য এলাকায় এখন মাটি কামড়ে পড়ে আছেন ওই কেন্দ্রের সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম। মুর্শিদাবাদের সাংসদ মহম্মদ বদরুদ্দোজা খানকে দলের রাজ্য কমিটিতে জায়গা দিয়ে গুরুত্ব বাড়িয়েছে সিপিএম। কিন্তু অন্য দিকে, কংগ্রেসের উত্তর দিনাজপুর জেলা নেতৃত্ব দলীয় নানা সভায় বলতে শুরু করেছেন, রায়গঞ্জে এ বার তাঁদেরই প্রার্থী থাকবে। একই ভাবে মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসও বদরুদ্দোজার আসনে প্রার্থী করার জন্য দলের এক বিধায়কের নাম ভেবে ফেলেছে।

Advertisement

কংগ্রেসের যুক্তি, লোকসভা ভোটে বিজেপিকে হারিয়ে সরাসরি সরকার গড়ার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে তারাই। ওই দুই আসনে সংখ্যালঘু ভোটের অনুপাতও যথেষ্ট। এই ধরনের সব অঙ্কের ফায়দা নিতে গেলে কংগ্রেসের প্রতীকেই প্রার্থী দিতে হবে। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘বিধানসভা ভোটে সিপিএম ছিল ‘লিডিং পার্টনার’। তারাই আমাদের চেয়ে অনেক বেশি আসন লড়েছিল। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে দেশের সরকার গড়া এবং সংখ্যালঘু সমর্থনের কথা মাথায় রেখে কংগ্রেসকে গুরুত্ব দিতে হবে।’’ সংখ্যালঘু মন নজরে রেখেই সিপিএমে ‘ব্রাত্য’ হয়ে যাওয়া আব্দুস সাত্তারকে সাধারণ সম্পাদক করেছে প্রদেশ কংগ্রেস। আব্দুল মান্নান, সাত্তার, সর্দার আমজাদ আলিদের দলের কাজে বেশি করে ব্যবহারও করা হচ্ছে।

সিপিএমের এক রাজ্য নেতার পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘আমরা কি জঙ্গিপুর বা মালদহের আসন চাইতে যাব? রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ, দু’টি আসনেই একাধিক দাবিদার ও গোষ্ঠী নিয়ে তৃণমূল যথেষ্ট সমস্যায় আছে। আমরা কি বিজেপি-তৃণমূলের সুবিধা করে দেব?’’

প্রকাশ্যে অবশ্য সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র কেউই এই টানাপড়েন নিয়ে মুখ খুলছেন না। তাঁদের বক্তব্য, এখনও জল অত দূর গড়ায়ইনি। তবে সূত্রের খবর, বিধান ভবন থেকে এক বর্ষীয়ান নেতা আলিমুদ্দিনের মন বুঝতে সক্রিয় হয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement