সবার মাঝে: ইশা। নিজস্ব চিত্র
মৌসম দল ছেড়েছেন। প্রার্থী দাঁড়াচ্ছেন শাসকদলের হয়ে। কেন এমন হল? প্রচারে বেরিয়ে পুরনো কংগ্রেস কর্মীদের প্রশ্নের মুখে পড়ে ইশা খান চৌধুরী বললেন, ‘‘ও নিয়ে আর আমরা ভাবি না। আপনারাও ভাববেন না। জানি ওকে আপনারা ভোট দিয়ে জিতিয়েছিলেন। তাই কষ্ট হচ্ছে। ওর হয়ে আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’’
প্রচারে বেরিয়ে এ ভাবেই কোথাও পুরনো কর্মীদের কাছে মৌসমের হয়ে ক্ষমা চাইলেন। কোথাও উন্নয়নের জন্য দল বদলানোর প্রয়োজন হয় না বলে পরোক্ষে মৌসমকে কটাক্ষ করে সোমবার মালদহের চাঁচলে দাপিয়ে বেড়ালেন উত্তর মালদহের কংগ্রেস প্রার্থী ইশা খান চৌধুরী। পাশাপাশি এ দিন রতুয়ায় রোড শো করে প্রচার চালান মৌসম নুরও।
এক সময় কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি চাঁচলে হারানো মাটি খুঁজতে এ দিন সকাল থেকে সন্ধে রোড শো করে ইশা চষে বেড়ান এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত। কখনও গাড়ি থেকে নেমে ঢুকে পড়লেন বাজারে। কখনও পথচলতি মানুষকে আলিঙ্গন করে ভোট প্রার্থনা করলেন। আটটি কর্মিসভাও করেন ইশা। রোড শোয়ের সময় এ দিন রাস্তার দু’পাশে মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
এ দিন সকালে চাঁচলের ধানগাড়া পঞ্চায়েতের এলাঙ্গি থেকে ইশার রোড শো শুরু হয়। কখনও বাজার দেখে গাড়ি থেকে নেমে প্রতিটি দোকানে গিয়ে পরিচয়পর্ব সারলেন, কখনও পথচলতি মানুষের হাত ধরে আশীর্বাদ প্রার্থনা করলেন। একে একে খেমপুর, কান্ডারন, ভাকরি, রামপুর এলাকা ঘুরে দুপুরে চাঁচলে একটি হোটেলে খাওয়া দাওয়া সারেন। প্রচারে বেরিয়ে নিরামিষ খাবারই পছন্দ ইশার। এ দিনও ডাল-ভাতের সঙ্গে পাঁচমিশেলি আনাজ খেয়েছেন।
বিকেলে মালতীপুর, চন্দ্রপাড়া, জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রচার চালান। বিষনপুর এলাকায় ইশা ঢুকে পড়েন পুরনো কংগ্রেস কর্মী বৃদ্ধ গিয়াসুদ্দিন আহমেদের বাড়িতে। খুব একটা হাঁটাচলা করতে পারেন না তিনি। মৌসমের প্রসঙ্গ তুলতেই ইশা পুরনো কথা ভুলে যেতে বলেন। মৌসমের হয়ে তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। প্রাক্তন শিক্ষক গিয়াসুদ্দিন বলেন, ‘‘ছাত্র জীবনে গনিখানকে দেখে কংগ্রেস করা শুরু করি। আজও রয়ে গিয়েছি। দীর্ঘ জীবনে কত জনকে দল বদল করতে দেখেছি। কিন্তু মৌসম চলে যাবে ভাবতেও কষ্ট হয়।’’
ইশা এ দিন বলেন, ‘‘মানুষ দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করছেন। এটাই যথেষ্ট।’’
ইশার পাশাপাশি এ দিন মৌসম রতুয়ার বিলাইমারি, মহানন্দটোলা, দেবীপুর ও কাহালা পঞ্চায়েত এলাকায় রোড শো করেন। সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত চারটি এলাকায় দাপিয়ে প্রচার চালান তিনিও। ইশার বক্তব্য প্রসঙ্গে মৌসম বলেন, ‘‘কেন দল ছেড়েছি তা আগে বহু বার বলেছি। ফলে প্রচারে কে কোথায় কী বলল, তা নিয়ে ভাববার অবকাশ এখন নেই। মানুষ আমার পাশে রয়েছেন, তাঁদের সবার কাছে পৌঁছনোটাই এখন আমার প্রধান কাজ।’’