প্রতীকী ছবি।
তৃতীয় দফার ভোটের ২৪ ঘন্টা আগেই আরও পাঁচ জন থানা আধিকারিক, একজন এএসআই এবং একজন মহকুমা পুলিশ অফিসারকে অপসারণ করল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সোমবার রাজ্য সরকারকে চিঠি পাঠিয়ে কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট অফিসারদের পদ থেকে সরিয়ে দিতে হবে। তাঁদের স্থলাভিষিক্ত যাঁরা হবেন, সেই নতুন অফিসারদের নিয়োগের আগেই সরাতে হবে সকলকে। আজ, মঙ্গলবার ভোট হবে জঙ্গিপুর, বালুরঘাট, মালদহ উত্তর, মালদহ দক্ষিণ এবং মুর্শিদাবাদ আসনে।
মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানার আইসি সৈকত রায়, ওই জেলার সামসেরগঞ্জ থানার এএসআই বিধান হালদার, ফারাক্কা থানার আইসি উদয় শংকর ঘোষ, পশ্চিম বর্ধমান জেলার বারাবনি থানার অজয় মণ্ডল, ওই জেলার অণ্ডাল থানার পুলিশ অফিসার রাজশেখর মুখোপাধ্যায়, উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুর থানার আইসি কৃষ্ণেন্দু ঘোষ এবং বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের ডিএসপি সুকমলকান্তি দাসকে অপসারণের নির্দেশিকা পাঠিয়েছে কমিশন। ভোটের মরসুমে বিজেপি-সহ বিরোধীরা এঁদের নামে নালিস জানিয়েছে কমিশনে।
প্রতি দফার নির্বাচনের আগে এভাবে অফিসার বদলির পিছনের বিজেপির ষড়যন্ত্রই দেখছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলনেতা ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন বাংলায় মস্তানি দেখাচ্ছে। এ সব মোদী সাহেবের ষড়যন্ত্র। প্রধানমন্ত্রী শহিদদের কথা বলে ভোটের প্রচার করছেন, কমিশন তা বন্ধ করতে পারে না। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে প্রচার চলছে। কমিশন কিছু করতে পারছে না।’’ রাজ্যের আরেক মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, ‘‘বিজেপি আর বিজেপির বন্ধু কংগ্রেসের কথায় কমিশন এ সব করছে। নাগপুরের ( আরএসএস-এর সদর কার্যালয়) আরেক বন্ধু দিল্লিতে বসে কলকাঠি নাড়ছেন। কিন্তু এ সবে কিছু হবে না। বিরোধীদের এ সবই ভরসা। আমাদের ভরসা মানুষ।’’
এ দিনই সংশ্লিষ্ট সকলেই তাঁদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে কার্যভার বুঝিয়ে দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, তাদের নির্দেশিকা অনুযায়ী পদক্ষেপ করে তা জানাতে হবে সরকারকে। এ দিন সন্ধ্যায় নির্দেশিকা জারি করে নতুন পুলিশ অফিসারদের দায়িত্ব দিয়েছে রাজ্য পুলিশ। এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)-এর দফতর থেকে জারি হওয়া ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী, মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুরের কোর্ট ইনসপেক্টর চিন্ময় ভট্টাচার্যকে রঘুনাথগঞ্জ থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মুর্শিদাবাদের ইনসপেক্টর (এমপিবি) সঞ্জীব বিশ্বাসকে ফারাক্কা থানার আইসি’র দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। বাঁকুড়ার ইনসপেক্টর (ডিআইবি) অভিজিৎ বিশ্বাস দায়িত্ব পেয়েছেন বীজপুর থানার। অপসারিত অফিসার সৈকত রায়, কৃষ্ণেন্দু ঘোষ এবং উদয় শংকর ঘোষকে পাঠানো হয়েছে সিআইডি’তে।
কয়েকদিন আগে অণ্ডালে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়ের প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। সিপিএমের অভিযোগ ছিল, তাদের দলীয় প্রার্থী গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়ের উপরে হামলা চালানো হয়ছিল বারাবনিতে। দু’টি ক্ষেত্রেই পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ওঠে। বাঁকুড়া জেলার বিদায়ী সাংসদ সৌমিত্র খাঁ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে ‘ফেসবুক লাইভ’-এ অভিযোগ করেছিলেন, সুকোমলবাবু তাঁকে খুনের ‘চক্রান্ত’ করছেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অজিত পতি জানান, তাঁরাও এসডিপিওকে সরানোর দাবি নির্বাচন কমিশনের কাছে জানিয়েছিলেন।