লোকসভা ভোটে রায়গঞ্জের সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের সমর্থনে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার শুরু করেছেন দলের নেতা-কর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত।
এক কালের ক্যাডার-ভিত্তিক দলের ভরসা এখন সোশ্যাল মিডিয়াই। তাই লোকসভা ভোটে রায়গঞ্জের সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের সমর্থনে এই মাধ্যমেই প্রচার শুরু করেছেন দলের নেতা-কর্মীরা। খোদ প্রার্থীও প্রচারের লাইভ দিচ্ছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
জেলা সিপিএমসূত্রে জানা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচার চালানোর জন্য দলের তরফে ইতিমধ্যেই ‘আইটি সেল’ খোলা হয়েছে। লোকসভা, বিধানসভা ছাড়াও ব্লক, অঞ্চল এবং বুথভিত্তিক আলাদা আলাদা হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করছে সিপিএম। প্রতিটি পর্যায়ে একজন আইটি ইন-চার্জ থাকছেন। তাঁরাই গোটা বিষয়টি পরিচালনা করছেন। দলের ইসলামপুর জোনাল সম্পাদক বিকাশ দাস বলেন ‘‘দলের নেতা-কর্মীরা ছাড়াও এলাকার বিশিষ্ট মানুষকে এতে যুক্ত করা হচ্ছে। গ্রুপের মাধ্যমে গত পাঁচ বছরের সাংসদ সেলিমের তহবিল উন্নয়নমূলক কাজ, লোকসভায় বিভিন্ন বিতর্কের ভাষণ, দলীয় কর্মসূচি এবং যে কোনও বিষয়ে দলের বক্তব্য খুব সহজেই সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে।’’
দলের নেতাদের দাবি, আগের মতো দলে সেভাবে আর ক্যাডার নেই। তাঁদের বক্তব্য, এখন প্রচুর মানুষ ফেসবুক, টুইটার, হোয়াট্সঅ্যাপ ব্যবহার করেন। সহজেই এঁদের কাছে পৌঁছে যাওয়া তাঁদের লক্ষ্য। যাঁরা সাধারণ মানুষ তাঁরাও যুক্ত হচ্ছেন, বিভিন্ন বিষয়ে মন্তব্য করছেন। বাইরে থেকে সেই চেষ্টাটিকেই এ বার আরও সংগঠিত ভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। প্রার্থী সেলিম বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচারও শুরু করে দিয়েছি। সাড়াও মিলতে শুরু করেছে।’’ তিনি অবশ্য বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে সকলের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করছি। সময় খুব কম। সব জায়গায় পৌঁছনোর চেষ্টা করছি।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, তারাও লোকসভা, বিধানসভা ও বুথভিত্তিক হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করছে। এর জন্য জেলা সিপিএম নেতৃত্বের তরফে কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের জন্য বুথভিত্তিক কমিটি তৈরি করা হচ্ছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘‘আধুনিক প্রযুক্তিকে অস্বীকার করা সম্ভব নয়। প্রযুক্তির মাধ্যমে সহজেই মানুষের কাছে পৌঁছনো যায়।’’ ইতিমধ্যেই ফেসবুকে চোখ রাখলেই দেখা যাচ্ছে, সিপিএমের প্রচার চলছে এখানেও।
বিরোধীদের দাবি, পঞ্চায়েত ভোট থেকে শিক্ষা নিয়ে তারা দেখেছে, শাসক দলের সন্ত্রাসের ভয়ে বহু মানুষ ইচ্ছা থাকলেও প্রকাশ্যে মিটিং-মিছিলে আসতে পারেন না। নিজের পছন্দের দলকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানাতে পারেন না। তাঁদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া খুবই কার্যকর হবে। তৃণমূল যদিও সিপিএমের এই সোশ্যাল মিডিয়া-নির্ভর প্রচারকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। তবু দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, তারাও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভোট-প্রচার শুরু করছেন। ইতিমধ্যে তৃণমূলের রায়গঞ্জের প্রার্থী কানাইয়ালাল আগরওয়াল সমর্থনে দলীয় কর্মীরা পৃথক গ্রুপ তৈরি করেছে। এতে ভাল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তৃণমূলের দাবি, শুধু সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যেই না থেকে দরজায় দরজায় পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন কর্মীরা।
সব মিলিয়ে আগামী কিছু দিন ভোট-যুদ্ধে সরগরম থাকবে সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়া।