প্রতীকী ছবি।
রামনবমী পালনকে ঘিরে গত বছর উত্তেজনা ছড়িয়েছিল রাজ্যের নানা জায়গায়। সেই ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এ বার ভোট-পর্বের মাঝে রামনবমী উদযাপন নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক থাকার আবেদন জানাল সিপিএম। সেই সঙ্গেই রাজ্যের মানুষের কাছেও তাদের আর্জি, বিভাজন ও প্ররোচনা সৃষ্টির চেষ্টা হলে তাতে পা না দিয়ে সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রাখুন। একই সুরে কথা বলেছে তৃণমূলও। কংগ্রেস অবশ্য এর পিছনে সরাসরি বিভাজনের রাজনীতি আছে বলে অভিযোগ তুলেছে।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘‘আমরা রাজ্যের সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ এবং শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে আহ্বান করছি, সতর্ক থাকুন। ঐক্যবদ্ধ থাকুন। কোনও সুযোগ সাম্প্রদায়িক শক্তিকে দেবেন না।’’ তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই শাসক দলই রামনবমী উৎসবকে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের স্বার্থে ব্যবহার করেছে। রাজ্যের শিক্ষা, সংস্কৃতি জগৎ-সহ নানা অংশের ব্যক্তিত্ব গত বার পথে নেমে এই উত্তেজনা তৈরির প্রতিবাদ করেছিলেন। লোকসভা ভোটের সময়ে ফের দুই শাসক দল মেরুকরণের রাজনীতি করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করে সূর্যবাবু জনতার কাছেই আবেদন করেছেন সতর্ক থেকে শান্তিভঙ্গের চেষ্টা প্রতিহত করার।
ভোট-পর্ব শুরু হয়ে যাওয়ার পরে ১৪ এপ্রিল পড়ছে রামনবমী। সূর্যবাবুর বক্তব্য, ‘‘সংবিধানে ও নির্বাচনী আচরণবিধিতে সুস্পষ্ট ভাবে বলা আছে, নির্বাচনী স্বার্থে ধর্মীয় আবেদনকে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনের সময় রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যুক্ত পুলিশ ও প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের
অধীন, এ কথা মনে রেখেই এই বিষয়ে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে।’’ রামনবমীর প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘সাম্প্রদায়িকতাকে সামনে রেখে ভোটের মধ্যে এ ধরনের কর্মসূচিতে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ হয়। ফলে নির্বাচন কমিশন কী ব্যবস্থা নেয়, সেটাই দেখার।’’ কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিও এ দিন দিল্লিতে বলেন, ‘‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতারা নিজেদের বুকে হাত রেখে বলুন, রামনবমীর উদ্দেশ্য কী। যে কোনও অন্ধ অরাজনৈতিক অবুঝ ব্যক্তিও বলে দেবেন, এর উদ্দেশ্য কী। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ কোনও আইন মানে না। জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা, সুপ্রিম কোর্টের রায় তাদের কাছে গুরুত্ব পায় না।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিশ্ব হিন্দু পরিষদ অবশ্য সিপিএম এবং কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেছে। পরিষদের পূর্ব ক্ষেত্রের সংগঠন সম্পাদক শচীন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘কমিউনিস্টরা ধর্মবিরোধী। এরা রামনবমীর বিরোধিতা করবে, এটাই স্বাভাবিক। কংগ্রেস এবং তৃণমূলও সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতি করছে। রাজ্যে রামনবমী যে ভাবে হওয়ার, সে ভাবেই হবে।’’