ক্যানিংয়ের সভায় অমিত শাহ। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
শাহ বলছেন ‘দিদি’ তাঁকে সভা করার অনুমতি দিচ্ছেন না। অথচ প্রশাসন বলছে, তাঁর সভার যাবতীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছিল। তিনিই আসেননি। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের বারুইপুরের সভা নিয়ে এ ভাবেই দিনভর চাপান-উতোর চলল বিজেপি এবং রাজ্য প্রশাসনের মধ্যে। সরব হলেন দিল্লির বিজেপি নেতারাও।
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ নিয়ে দলের কিছু বলার নেই। প্রশাসন তার সুবিধা মতো যা করার করছে। তাতে আমাদেরও মাঝে মধ্যে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’’ অন্য দিকে, সভা বাতিল ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় বারুইপুর এলাকায়। খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায় বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে।
সোমবার রাজ্যে ৩টি সভা করার কথা ছিল শাহের। সকালে ক্যানিংয়ে সভা করে দুপুরে তাঁর যাওয়ার কথা ছিল বারুইপুরের আটঘড়ার মাঠে। কিন্তু সোমবার সকালেই বিজেপির তরফে জানানো হয়, যে মাঠে শাহের হেলিকপ্টার নামার কথা ছিল সেখানে আগাম অনুমতি থাকা সত্ত্বেও রবিবার শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করে দেন মাঠের মালিক।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ক্যানিংয়ের সভায় শাহ বলেন, ‘‘মমতাদিদি আপনি সভা করতে দিন বা না দিন, কথা বলতে দিন বা না দিন, বাংলার জনতা ঠিক করে ফেলেছেন এ বার লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে হারিয়ে দেবেন। বাংলায় ২৩টার বেশি আসন পাবেন নরেন্দ্র মোদী।’’
যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ জেলা প্রশাসন এবং মাঠের মালিক। স্থানীয় ক্লাবের সভাপতি মোহন পাল বলেন, ‘‘আমরা হেলিপ্যাডের জন্য অনুমতি দিয়েছিলাম। অনুমতি প্রত্যাহারের কোনও বিষয় নেই।’’ বারুইপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, ‘‘অমিত শাহের হেলিপ্যাডের সব রকম নিরাপত্তার ব্যাবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি আসেননি।’’ যদিও বিকেলে রাজারহাটের সভা থেকেও সকালের অভিযোগেরই পুনরাবৃত্তি করেন শাহ।
এ প্রসঙ্গে দিল্লিতে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনে পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। বিরোধীদের উপর হামলা হচ্ছে। খুন করা হচ্ছে। এমনকি, বিরোধীদের জনসভাও করতে দেওয়া হচ্ছে না।’’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরও সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘‘অমিত শাহের যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে একটি জনসভা করার কথা ছিল। দিন পাঁচেক আগেই অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে অনুমতি বাতিল করা হয়।’’
অন্য দিকে, শাহের সভা বাতিল হওয়ার জেরে খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায় বিজেপি ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে। সভা নিয়ে টালবাহানার মধ্যেই তৃণমূলের সমর্থকেরা একটি অটোর মিছিল বার করে। তৃণমূলের অভিযোগ, ওই মিছিলে বিজেপি সমর্থকেরা হামলা চালায়। বেশ কয়েকটি অটোয় ভাঙচুরও চালানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তিও হয়। পরে বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি কর্মীরা।
এ দিকে শাহের সভা বাতিলের অভিযোগে এ দিন নির্বাচন কমিশনের দফতরের বাইরে ধর্নায় বসেন যাদবপুর লোকসভার বিজেপি প্রার্থী অনুপম হাজরা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় টামটা।