প্রার্থী শ্রমিক নেতা নন, চর্চা কংগ্রেসেই

কংগ্রেস আসানসোল কেন্দ্রে সিআরপি-র প্রাক্তন ডেপুটি কমান্ড্যান্ট বিশ্বরূপ মণ্ডলের নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৪৩
Share:

জোটের (বা আসন সমঝোতা) জল্পনা তখনও শহরে। সেই জল্পনা আরও উস্কে ওঠে, প্রাথমিক ভাবে সিপিএম ২৫টি কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করলেও আসানসোলের নাম সেখানে না থাকায়। কিন্তু, পরে সে সব ‘জল্পনা’ সরিয়ে সিপিএম প্রার্থী ঘোষণা করেছে। কংগ্রেসও সেই পথে হেঁটেছে। কিন্তু, কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব ও কর্মীদের একাংশের দাবি, তাঁরা চেয়েছিলেন আসানসোলে প্রার্থী হোন কোনও শ্রমিক নেতা।

Advertisement

কংগ্রেস আসানসোল কেন্দ্রে সিআরপি-র প্রাক্তন ডেপুটি কমান্ড্যান্ট বিশ্বরূপ মণ্ডলের নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু, জেলার কংগ্রেস কর্মীদের একাংশ জানান, তাঁদের আশা ছিল কোনও শ্রমিক নেতাই এই বার প্রার্থী হবেন। তাঁদের দাবি, আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র মূলত শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকা। রয়েছেন রাজ্য-সহ ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশের শ্রমিকেরা। তা ছাড়া গত কয়েক বছরে একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি কারখানা বন্ধ হয়েছে এই এলাকায়। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্বের তরফে কোনও শ্রমিক নেতাকেই প্রার্থী করার দাবি জানানো হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। কিন্তু, বিশ্বরূপবাবুর নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার পরে যাবতীয় আশা পূরণ হল না বলে মনে করছেন কংগ্রেস নেতা, কর্মীদের একাংশ।

কিন্তু কেন শ্রমিক নেতাকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা, কর্মীরা? জেলার নেতা, কর্মীদের একাংশের ব্যাখ্যা, এই কেন্দ্রটি থেকে সাংসদ হিসেবে শ্রমিক নেতারা নির্বাচিত হয়েছেন বহু বার। তা সে বামেদের কেটনারায়ণ মিশ্র, দেবেন সেন, রবিন সেন, হারাধন রায়, বিকাশ চৌধুরী থেকে বংশগোপাল চৌধুরীই হন বা কংগ্রেসের আনন্দগোপাল মুখোপাধ্যায়, সকলেই। এলাকার কংগ্রেস কর্মীদের একাংশের মতে, এই কেন্দ্র মূলত শিল্পাঞ্চল এলাকা। শিল্পক্ষেত্রের সমস্যা তুলে ধরার জন্য দরকার শ্রমিক নেতৃত্বকেই। আইএনটিইউসি নেতা চণ্ডী চট্টোপাধ্যায়ও প্রার্থী প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র শিল্পাঞ্চল হওয়ায় শিল্পের সঙ্গে জড়িত কেউ প্রার্থী হলেই ভাল হত।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

শিল্প ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িতদের প্রার্থী করার এই ‘ঐতিহ্যে’র কথা মাথায় রেখেই কংগ্রেসের জেলা কমিটির তরফে প্রার্থী হিসেবে পাঁচ জনের নাম প্রস্তাব আকারে প্রদেশ নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয় বলে জানা গিয়েছে। ওই পাঁচ জনের মধ্যে ছিলেন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরের শ্রমিক নেতৃত্বও, দাবি কংগ্রেসের জেলার এক শীর্ষ নেতার।

কিন্তু, তাঁদের কাউকেই বেছে না নিয়ে এলাকায় প্রায় ‘অপরিচিত’ মুখ এক জনকে প্রার্থী করায় প্রচার পর্বে অসুবিধা তো হবেই, জানান একাধিক কংগ্রেস কর্মী। তা ছাড়া প্রার্থী এলাকার অর্থনীতি, সামাজিক অবস্থা, শ্রমিক-সমস্যা নিয়ে কতখানি ওয়াকিবহাল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ওই কর্মীরা। কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা বিকাশ ঘটক বলেন, ‘‘পরিচিত মুখ এবং এলাকায় কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত, শ্রম-ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কেউ প্রার্থী হলে ভাল হত।’’ যদিও প্রার্থী বিশ্বরূপবাবু বলেন, ‘‘এলাকার সঙ্গে আমি পরিচিত। শ্রমিকদের সমস্যা নিয়েও আমার ধারণা রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement