নরমে-গরমে রবিবাসরীয় ভোটপ্রচার 

কেউ শোনালেন গান, কেউ চালালেন হুড খোলা জিপ। কেউ আবার ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করে শুনলেন কটাক্ষ। রবিবাসরীয় ভোট প্রচারে উত্তাপ ছড়াল রাজ্য জুড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৯ ০৪:২৯
Share:

দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়ের প্রচার। রবিবার। ছবি: পিটিআই।

কেউ শোনালেন গান, কেউ চালালেন হুড খোলা জিপ। কেউ আবার ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করে শুনলেন কটাক্ষ। রবিবাসরীয় ভোট প্রচারে উত্তাপ ছড়াল রাজ্য জুড়ে।

Advertisement

গত রবিবারেও কোথাও কোথাও প্রচারে বেরিয়েছিলেন তৃণমূল এবং সিপিএম প্রার্থীরা। কিন্তু বিজেপির প্রার্থী তালিকা তখনও ঘোষণা না হওয়ায় যুযুধান সব পক্ষকে দেখা যায়নি রাস্তায়। এ দিন অবশ্য বিজেপির প্রার্থীরাও নেমে পড়েন প্রচারে।

দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়ের এ দিনের সঙ্গী ছিলেন রাজ্যের হেভিওয়েট দুই মন্ত্রী। সকালে তাঁর সঙ্গে রাস্তায় নামেন অরূপ বিশ্বাস। আর বিকেলে গার্ডেনরিচ এলাকায় প্রার্থীর সঙ্গী হন ফিরহাদ হাকিম। দক্ষিণ কলকাতার বামফ্রন্ট প্রার্থী এ দিন প্রচার করেন পার্ক সার্কাস বাজার, কড়েয়া রোড, বেকবাগানের অলিগলিতে। বাংলা নয়, হিন্দিতেই এ দিনের প্রচারে জোর দেন নন্দিনী মুখোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, হুডখোলা জিপ নয়, হেঁটে প্রচারেই তিনি স্বচ্ছন্দ।

Advertisement

উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিংহ ঠনঠনিয়া কালী বাড়িতে পুজো দিয়ে এ দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রচার শুরু করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার কেন্দ্রে শেষ দফায় ভোট। সময় যত গড়াবে, প্রচারের তেজও তত বাড়বে।’’ তাঁর কেন্দ্রের বামফ্রন্ট প্রার্থী কনীনিকা ঘোষ সকালে উল্টোডাঙার মুচিপাড়া ঘুরে বিকেলে পৌঁছে যান নিউ মার্কেট অঞ্চলে। তাঁর স্লোগান— ‘‘তৃণমূল-বিজেপি একই পয়সার এ-পিঠ ও-পিঠ।’’

আসানসোলের তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন অবশ্য প্রচারে নেমে বিতর্ক তৈরি করেছেন। তাঁর অভিযোগ, খারাপ রাস্তার কারণে ব্যাহত হচ্ছে যাত্রা। যা শুনে বিরোধীদের কটাক্ষ, এর দায় তো রাজ্য সরকারকেই নিতে হবে! অন্য দিকে, আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় ঘাগরবুড়ি মন্দিরে পুজো দিয়ে হুড খোলা জিপ চালিয়ে জনসংযোগে নেমে পড়েন। এর কাছাকাছি সময়েই মেদিনীপুরের নির্বাচনী কর্মিসভায় বাবুলের ‘বিতর্কিত’ গানের সুরে গলা মিলিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন সেখানকার বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ।

বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী অভিনেত্রী নুসরত জহানকে নিয়ে এ দিন ‘হতাশা’ প্রকাশ করেছে বাদুড়িয়াবাসীর একাংশ। তাঁদের আশা ছিল প্রার্থী মঞ্চে উঠে ছবির সংলাপ শোনাবেন, গান শোনাবেন। কিন্তু নুসরত সাকুল্যে একটি বাক্যই বলেছেন— ‘‘আপনাদের উপস্থিতিতে মন ভরে গেল। ডাকলেই আসব।’’

‘ডাকলেই আসার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মালদহ উত্তরের তৃণমূল প্রার্থী মৌসম নূরও। দমদমে বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, শুধু বিজেপি সমর্থক নয়, তাঁর লক্ষ্য এলাকার বামপন্থী মানুষদের মন জয়। জেসপ কারখানার বন্ধ গেটের সামনে দাঁড়িয়ে কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর সতর্কবার্তা— ‘‘লড়াইটা রাজনীতির। সৌগতবাবু, মুখ্যমন্ত্রী কিংবা বিরোধী তারকা প্রার্থীদের নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করবেন না।’’

অন্য দিকে, ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রের প্রার্থী বিরবাহা সরেনের সমর্থনে রবিবার গড়বেতায় কর্মিসভা করে তৃণমূল। বিরবাহাকে আদিবাসী প্রথায় বরণ করে নেওয়া হয়। কেশিয়াড়িতে পথসভা করেন মেদিনীপুর কেন্দ্রের সিপিআই প্রার্থী বিপ্লব ভট্ট। মেদিনীপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মানস ভুঁইয়া এ দিন এগরায় কর্মিসভা করেন।

তমলুকের দুই প্রার্থী তৃণমূলের দিব্যেন্দু অধিকারী ও বিজেপির সিদ্ধার্থ নস্করও পুরোদমে রবিবাসরীয় প্রচার সেরেছেন। কীর্তন গায়ক সিদ্ধার্থ কর্মিসভায় দু’কলি গানও শোনান।

হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এ দিনের প্রচারে হাতিয়ার করেছিলেন বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ‘নকুলদানা’ তত্ত্বকে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভোটের পরে থালা করে ওঁর বাড়িতেই নকুলদানা পৌঁছে দেব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement