সোমবার বহরমপুর মানসিক হাসপাতালের এমন ৬৪ জন আবাসিক ভোট দিলেন।
ভোট-রাজনীতি থেকে তাঁদের অবস্থান বহু যোজন দূরে!
সোমবার বহরমপুর মানসিক হাসপাতালের এমন ৬৪ জন আবাসিক ভোট দিলেন। ওই ভোটারদের যাতায়াতের জন্য জেলা নির্বাচন কমিশন বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করেছিল। সোমবার সকালে সেই বাসে বহরমপুর মানসিক হাসপাতাল থেকে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় ভোটগ্রহণ কেন্দ্র, বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজের বুথে। সেখানে ভোটদান পর্ব মিটে যেতেই তাঁদের ফের ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে।
এত দিন তাঁরা ভোটদানে যোগ দিতে পারতেন না। মাইকে ভেসে আসা ভোটের প্রচার শুনেছেন বহু দূর থেকে। কিন্তু তাঁরাও যে ভোটার, এত দিন সে কথা মানেনি নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে আন্দোলন করেন সমাজকর্মীরা। পরে নির্বাচন কমিশন দাবি মেনে নেয়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সমাজকর্মী তথা অঞ্জলী-র কর্ণধার রত্নাবলী রায় বলছেন, ‘‘এ বছর পাভলভ মানসিক হাসপাতালের ৫৪ জন এবং বহরমপুর মানসিক হাসপাতালের ৬৪ জনের ভোট দেওয়ার আবেদন মেনে নিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।’’ রত্নাবলীর আক্ষেপ, ‘‘এখনও অনেকটা পথ যেতে হবে। কেননা, পুরুলিয়া মানসিক হাসপাতালের ৪৪ জন আবাসিকের ভোটাধিকারের আবেদনপত্র গ্রহণ করেনি মহকুমা প্রশাসন।’’
এ দিন প্রথম বার ভোট দিলেন বিহারের বেগুসরাইয়ের মিনুদেবী। তিনি গত সাড়ে চার বছর ধরে মানসিক হাসপাতালের আবাসিক। মিনুদেবী বলছেন, ‘‘আমার ভোটার কার্ড ছিল। কিন্তু বাড়ির কাজ ফেলে কোনও দিন ভোট দিতে যেতে পারিনি। এ দিন ভোট দিতে পেরে ভাল লাগছে। আমি চাই হাসপাতালের ও চিকিৎসা পরিষেবার উন্নতি হোক।’’ ন’বছর ধরে হাসপাতালে রয়েছেন নদিয়ার মদনপুরের মিনা কুণ্ডু। এ দিন তিনিও প্রথম ভোট দিলেন।
তবে কৃষ্ণনগরের সুজিত বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগে ভোট দিয়েছেন। তবে গত কয়েক বছর ধরে হাসপাতালের আবাসিক হিসেবে থাকার ফলে গত বিধানসভা এবং পঞ্চায়েত ভোট দিতে পারেননি তিনি। এ দিন তিনি ভোট দিতে পেরে বেজায় খুশি। তিনি বলছেন, ‘‘নিজেকে স্বাধীন মনে হচ্ছে।’’
কিন্তু ওই আবাসিকেরা জানলেন কী ভাবে যে, কোথায় এবং কাকে ভোট দিতে হবে? রত্নাবলী বলছেন, ‘‘গত তিন মাস ধরে নকল ইভিএমের মাধ্যমে ওঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। চেনানো হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতীকও।’’