রাজ্য রাজনীতির কেষ্ট। —ফাইল চিত্র।
‘নব্বইয়ের বেশি নয়’। সোমবার দুপুর পেরোনোর পরে দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে ফোনে পইপই করে এই নির্দেশই দিয়েছিলেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর নির্দেশ মতো দিনভর নেতা-কর্মীরা ভোট করলেও ছন্দ কেটেছে বীরভূম লোকসভার রামপুরহাটে। সেখানের হাজি মৌলানা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে ১০০% ভোট পড়েছে বলে খবর। তা ‘আনন্দেই’ হয়েছে। হাসতে হাসতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তেমনই বললেন রাজ্য রাজনীতির কেষ্ট।
কোথায় কেমন ভোট হচ্ছে, তা জানার জন্য মঙ্গলবার বারবার সহকর্মীদের ফোনেই দলীয় সতীর্থদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন অনুব্রত। সেই সময়ে বারবার করে তিনি বলেছিলেন ‘‘নব্বইয়ের বেশি নয়।’’ অর্থাৎ কোনও বুথে যেন নব্বই শতাংশের বেশি ভোট না হয়। তা হলে হয়তো পুনর্নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হবে। তেমনই মত ছিল জেলা তৃণমূল নেতাদের। রামপুরহাটের হাজি মৌলানা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একশো শতাংশ ভোটের পড়ার কারণ হিসেবে অনুব্রত বললেন, ‘‘আনন্দে হয়েছে। ভোট তো উৎসব! তাতে আনন্দ না থাকলে হয় না কি!’’ তবে নব্বইয়ের বেশি নয় বললেও ‘হাতের আঙুলে, না পায়ের আঙুলে চালাচ্ছিস! লক্ষ্মী সোনা চালিয়ে যাও!’’ তেমন বলতে শোনা গিয়েছিল বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতিকে। রামপুরহাটের বুথে একশো শতাংশের ভোট পড়ার ঘটনা ‘হাত না পায়ের আঙুলে’র, তা নিয়ে অবশ্য তর্ক রয়েছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যে।
রবিবার রাত সওয়া ন’টা নাগাদ অনুব্রতের একটি সাদা রঙের ছোট ফোন জমা নিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি। মঙ্গলবার বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতির নজরবন্দির সময়সীমা পেরোনোর পরে তা অনুব্রতের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে কমিশন। কিন্তু কমিশন ফোন নিলেও তাতে যে তাঁর ‘ভোট করানো’র কাজে ব্যাঘাত ঘটেনি, তা সোমবার বুঝিয়ে দিয়েছিলেন অনুব্রত। এ দিন সে প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘মোবাইল ফোন নিলে কী হয়েছে। বয়ে গেছে! ল্যান্ড ফোন আছে, অনেক ফোন আছে, কী হল আমার মোবাইল নিয়ে, সোমবার তো সারাদিন ফোন করেই চালালাম। ফোন নিয়ে নেওয়াতে আমার কোন অসুবিধা হয়নি।’’ বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতিকে নজরবন্দি করলেও এ বিষয়ে ভোটের দিন তিনি কী করলেন, তার রিপোর্ট অবশ্য কমিশন এখনও পর্যন্ত চায়নি বলে খবর। দলের তরফে বিষ্ণপুর লোকসভার দায়িত্ব পেয়েছেন অনুব্রত। সেখানেও বীরভূমের মতো ভোট করাতে চেষ্টা করবেন, তেমনই জানালেন তিনি।