জলশূন্য দুর্গাপুর ব্যারেজ। নিজস্ব চিত্র।
হু হু করে বেরিয়ে গিয়েছে জল। শনিবার সকাল হতেই দেখা যায় গোটা দুর্গাপুর ব্যারেজ জলশূন্য। তৈরি হওয়ার ৬২ বছর পর এই প্রথম বার এমন জলশূন্য হয়ে গেল ব্যারেজ। আর এর সঙ্গেই তৈরি হয়েছে জল সঙ্কটের আতঙ্ক।
আরও পড়ুন: ভিড় জল দেখতে, আশঙ্কাও
ব্যারেজ থেকে সমস্ত জল বেরিয়ে যাওয়ায় গোটা দুর্গাপুর শহরে জল সঙ্কট তৈরি হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামী দু’দিন পানীয় জলের সঙ্কটের মুখে পড়তে পারে ৪৩টি ওয়ার্ড। এই ব্যারেজ থেকেই ফিডার ক্যানেলের মাধ্যমে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে জল সরবরাহ করা হয়। ব্যারেজে জল না থাকায় ফিডার ক্যানেলের জলস্তরও নেমে গিয়েছে। পাশাপাশি, এই ব্যারেজ থেকে দামোদরের জল ব্যবহার করে দুর্গাপুরের তিনটি তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্র। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে বিদ্যুত্ উত্পাদনেও এর প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, যত তা়ড়াতাড়ি সম্ভব ব্যারেজের মেরামতির কাজ সেরে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মোদীর ভয়ে থমকে লগ্নি, মত মমতার
লকগেটের বেঁকে যাওয়া অংশ।
এ দিকে লকগেট ভেঙে যাওয়ার পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। এখনও সম্পূর্ণ মেরামত করা সম্ভব হয়নি ওই ভাঙা অংশ। রাতভর মেরামতের চেষ্টা করেও কোনও লাভ হয়নি। সেচ দফতর সূত্রে খবর, জলের চাপ থাকার জন্য মেরামতির কাজ করা সম্ভব হয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই যত ক্ষণ না জলের চাপ কমছে অপেক্ষা করতে হয়। ১ নম্বর লকগেটে জলের চাপ কমাতে ২, ৩ এবং ৪ নম্বর গেটও খুলে দেওয়া হয়। ভোররাতের মধ্যে ব্যারেজ জলশূন্য হয়ে যাওয়ার পরই কাজ শুরু করেন ইঞ্জিনিয়ররা। তবে কত ক্ষণে এই মেরামতি সম্ভব হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট জানাতে পারেননি সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ররা। এ দিকে, মাইথন জলাধার থেকে যাতে জল এখন ছাড়া না হয় সেই বার্তাও পাঠানো হয়েছে ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে। মেরামতির কাজ শেষ হওয়ার পর সবুজ সঙ্কেত মিললেই মাইথন জল ছাড়া শুরু করবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। সেচ দফতর জানিয়েছে, মাইথন থেকে এই ব্যারেজে জল আসতে প্রায় ৬ ঘণ্টা লাগে। জলাধার ভর্তি হতে অনেকটাই সময় লাগবে। ফলে যত ক্ষণ না জলাধার ভর্তি হচ্ছে, তত ক্ষণ শহরে পানীয় জলের সমস্যা থাকবে।
রাজ্য সরকার ডিভিসি-র সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেছে। ডিভিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যা জল লাগবে তারা দেবে। ব্যারেজের জন্য আনুমানিক ১৫ হাজার একর ফুট জলের প্রয়োজন। যদি সময় মতো লকগেট সারিয়ে ফেলা যায় তা হলে বিকেলের মধ্যেই জল ছাড়বে তারা।