corona virus

ভিন্ রাজ্যে সমস্যায় পশ্চিমের ২৮ হাজার

জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের স্বীকারোক্তি, ‘‘এ জেলার অনেকেই ভিন্ রাজ্যে আটকে রয়েছেন। বেশ কয়েকজন তাঁদের সমস্যার কথাও জানিয়েছেন। জেলা থেকে বিষয়টি রাজ্যকে জানানো হয়েছে।’’

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২০ ০০:৩৬
Share:

সতর্ক: লকডাউনে পথে কেন, জানতে মেদিনীপুরে পুলিশের নাকা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

লকডাউনের জেরে ভিন্= রাজ্যে আটকে পড়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের ২৮ হাজারেরও বেশি মানুষ। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছে। আটকে পড়া মানুষদের নাম-ঠিকানার তালিকাও তৈরি হয়েছে।
ভিন্‌ রাজ্যে আটকে পড়া বেশিরভাগই শ্রমিক। আর একাংশ চিকিৎসার জন্য ভিন্ রাজ্যে গিয়েছিলেন। কিছু লোক অন্য কাজেও ভিন্ রাজ্যে গিয়েছিলেন। এখন হাতের টাকা ফুরিয়ে আসায় এঁদের অনেকেই সঙ্কটে পড়েছেন। অনেকেই চাইছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁদের দ্রুত বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করুক। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের স্বীকারোক্তি, ‘‘এ জেলার অনেকেই ভিন্ রাজ্যে আটকে রয়েছেন। বেশ কয়েকজন তাঁদের সমস্যার কথাও জানিয়েছেন। জেলা থেকে বিষয়টি রাজ্যকে জানানো হয়েছে।’’

Advertisement

লকডাউন পর্বে এঁদের ফেরানোর উপায়ও নেই। তবে প্রশাসনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, ইতিমধ্যে ওই আটকে পড়া মানুষদের সুবিধার্থে কিছু পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। যেমন, ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়া পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের সাহায্য করতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির কাছে আগেই আবেদন করেছে এ রাজ্যের সরকার। ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়েছেন, হাতে টাকা নেই, এ রাজ্যের এমন মানুষদের সাহায্য করার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে অনুরোধ করার দায়িত্ব রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহকে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এ রাজ্যের ওই সব বাসিন্দা যাতে থাকা- খাওয়ার ন্যূনতম সুবিধেটুকু পান, রাজ্যগুলিকে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার অনুরোধ করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ওই সূত্র আরও মনে করিয়ে দিচ্ছে, ১৮টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে সঙ্কটে থাকা এ রাজ্যের শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে মহারাষ্ট্র সরকার পদক্ষেপ করেছে।
অবশ্য ওই অনুরোধে সব রাজ্য কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ভিন্ রাজ্যে আটকে রয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের ২৮,৪১২ জন। বড় অংশই ঘাটাল, দাসপুরের বাসিন্দা। জানা যাচ্ছে, গুজরাতে আটকে রয়েছেন এ জেলার মোহনপুরের বেশ কয়েকজন শ্রমিক। নিতাই দাস নামে এক শ্রমিকের কথায়, ‘‘আমরা সকলেই সমস্যার মধ্যে রয়েছি। হাতের টাকা শেষ হয়ে আসছে। ফলে ভীষণ আতঙ্কে রয়েছি।’’ মুম্বইয়ে আটকে রয়েছেন চন্দ্রকোনা রোডের কয়েকজন শ্রমিক। দিল্লিতে আটকে রয়েছেন ঘাটালের কয়েকজন শ্রমিক।

Advertisement

জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়া মানুষর পরিবারের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। যাঁদের পরিবার সমস্যায় রয়েছে, স্থানীয় প্রশাসনের তরফে তাঁদের খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘স্থানীয়স্তর থেকে ওঁদের পরিবারের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। সহায়তা করা হচ্ছে।’’ সূত্রের খবর, দিল্লিতে ও মুম্বইয়ে আটকে পড়া কিছু শ্রমিকের বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কিছু শ্রমিকের বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়াদের অনেকেই ঘুপচি ঘরের মধ্যে সারাক্ষণ বন্দি হয়ে থাকছেন। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, ‘‘ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়া কারও অসুবিধের কথা জানতে পারলে বিষয়টি রাজ্যকে জানানো হচ্ছে। জেলা থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement