Local Train

সাড়ে সাত মাস পর বুধবার থেকে রাজ্যে চালু হচ্ছে সীমিত লোকাল ট্রেন

প্রতিদিন মোট ১৮১ জোড়া লোকাল ট্রেন রাজ্যে চালানো হবে। এর মধ্যে শিয়ালদহ ডিভিশনে চলবে ১১৪ জোড়া ট্রেন। হাওড়া ডিভিশনে ৫০ জোড়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২০ ১৮:৫৭
Share:

ফিরতে চলেছে এই ছবি। তবে ভিড় নিয়ন্ত্রণ নিয়েই বাড়ছে উদ্বেগ।

তিন শাখায় মোট ১৮১ জোড়া ট্রেন নিয়ে আগামী বুধবার থেকে রেল পরিষেবা চালু করার সিদ্ধান্ত নিল রেল-রাজ্য। বৃহস্পতিবার রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তারা। সেই বৈঠকেই চূড়ান্ত হয়েছে, চাহিদার মূল সময় অর্থাৎ সকাল এবং সন্ধ্যায় বেশি সংখ্যায় ট্রেন চালানো হবে। চলতি সপ্তাহের শেষে চূড়ান্ত হবে আদর্শ আচরণবিধি।

Advertisement

আনলক পর্বে সব গতিবিধি যখন স্বাভাবিক হচ্ছে, তখন রেল পরিষেবা দ্রুত শুরু করতে বিভিন্ন মহল থেকে রাজ্য সরকার এবং রেলের উপরে চাপ তৈরি হচ্ছিল। রেলকর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট বিশেষ ট্রেনে উঠতে গিয়ে রেলরক্ষীদের সঙ্গে সাধারণ যাত্রীদের প্রায় নিত্য অশান্তি প্রশাসনের উপরে চাপ আরও বাড়াচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত পরিষেবা চালু নিয়ে গত সোমবার থেকে রেল-রাজ্য কথা শুরু হয়। এ দিন পর্যন্ত তিন দফায় আলোচনার শেষে সাড়ে সাত মাসের মাথায় ফের রেল পরিষেবা শুরু হতে চলেছে।

সিদ্ধান্ত হয়েছে, শিয়ালদহ শাখায় মোট ২২৮টি ট্রেন চলবে। হাওড়া শাখায় চলবে ১০১টি এবং খড়গপুরের দক্ষিণ-পূর্ব শাখায় তা ৩৪। রাজ্যের প্রস্তাব, যাত্রী-চাপ সামলাতে প্রতিটি ট্রেনকেই সব স্টেশনে দাঁড় করানো হোক। তা হলে যিনি মধ্যবর্তী স্টেশনে নামবেন বা উঠবেন, তাঁর পক্ষেও এই পদ্ধতি সুবিধাজনক হবে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এই প্রস্তাব বিবেচনায় রেখেছেন রেল কর্তৃপক্ষ। তা ছাড়া স্থির হয়েছে, দিনের ব্যস্ততম সময়ে অর্থাৎ সকাল এবং সন্ধ্যায় বেশির ভাগ ট্রেন চলবে। দুপুরে তুলনায় কম থাকবে ট্রেন। প্রতিদিনই যাত্রীর সংখ্যা এবং চাহিদা বিশ্লেষণ করা হবে। ভিড় বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে সমান্তরাল ভাবে বাড়ানো হবে ট্রেন সংখ্যাও। রেলকর্তারা জানাচ্ছেন, পরিষেবা শুরু হওয়ার পরে কোথায় ভিড় হচ্ছে, তার কার্যত ‘রিয়েল টাইম মনিটরিং’ করা হবে। শিয়ালদহ এবং হাওড়ার অতি ব্যস্ত কয়েকটি শাখায় সকালের দিকে ৪০-৫০% ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। আবার তুলনায় কম ব্যস্ত শাখার ক্ষেত্রে ওই সংখ্যা ১৫-২০ শতাংশের আশেপাশে থাকতে পারে। তবে সংক্রমণ রোখার স্বার্থে কোভিডের যাবতীয় সুরক্ষা বিধি কঠোর ভাবে মেনে চলার ব্যাপারে পদক্ষেপ করবে উভয় পক্ষ।

Advertisement

আরও পড়ুন: কোন রাজ্য ট্রাম্পের, কোথায় জিতলেন বাইডেন, দেখে নিন এক নজরে

রেল-রাজ্য আলোচনা শুরুর আগে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দুর্গাপুজোর মতো অত বড় উৎসব হয়ে যাওয়ার পরেও আমাদের রাজ্যে সংক্রমণ বাড়েনি। রেল চালু হওয়ার পরে জীবাণুনাশ এবং কোভিড বিধি পালন করা নিয়ে মুখ্যসচিব কথা বলবেন। ট্রেনের সংখ্যা যেন বাড়ানো হয়। বেশি ট্রেন হলে গাদাগাদি হবে না। কোভিড যাতে না-ছড়ায়, সেটা খেয়াল রাখতে হবে।”

রেল এবং প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সুরক্ষার সব দিক নিশ্চিত করতে চলতি সপ্তাহান্তেই চূড়ান্ত হবে আদর্শ আচরণবিধি। রেল-রাজ্যের সমন্বয়ে পুরোটা পরিচালিত হবে। তিন শাখায় মোট স্টেশন সংখ্যার নিরিখে রেলরক্ষী বাহিনী কম থাকায় রাজ্য পুলিশ তথা জিআরপিকে সহযোগিতা করতে হবে। প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, স্টেশনের মূল প্রবেশপথে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা রাখা, ভিড় নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি বিষয়গুলিতে সহযোগিতা এবং সমন্বয় করবে রাজ্য পুলিশ। বিনা মাস্কে ট্রেনে যাতে কেউ না ওঠেন, সে দিকে নজরদারি থাকবে।

সূত্রের খবর, পরিষেবা শুরুর বিষয়টা বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচার করবে রেল। একই সঙ্গে ট্রেনের সময়সূচি জানিয়ে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিজ্ঞাপন দেবে তারা। তবে প্রাক্ কোভিড-কালে যে সময়সূচি ছিল, তা-ই মোটামুটি মেনে ট্রেন চালানোর কথা ভাবা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে এক রেল-কর্তা জানান, ট্রেনের নতুন সূচি তৈরি করতে গেলে আনুষঙ্গিক আরও একাধিক ব্যবস্থাপনা বদলাতে হবে। তাতে, পরিষেবা শুরু করতে দেরি হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। ট্রেনের পুরনো সূচির সঙ্গে নিত্যযাত্রীরা পরিচিত। তা ছাড়া, পুরনো সূচি অনুযায়ী রেলের সিগন্যালিং এবং রেক ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থা সাজানো রয়েছে। তার খোলনলচে বদলাতে গেলে আনুষঙ্গিক সব কিছুই
বদলে যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement