রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো। —ফাইল চিত্র।
এক দিকে যখন আশার আলো, অন্য প্রান্তে তখন নিরাশা। বিহারের শোননগর থেকে রেলের পণ্যবাহী করিডর ডানকুনির বদলে অন্ডালে এসেই শেষ হবে— রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের এমন ইঙ্গিতের পরে দুই এলাকার চিত্রটা এই রকমই। সমীক্ষা, জমি অধিগ্রহণের কাজ এগোনোর পরেও ডানকুনি পর্যন্ত করিডর কেন হবে না, প্রশ্ন উঠেছে সেখানে। আবার, করিডরের শেষ প্রান্ত হলে নানা সুবিধা মেলার আশা দেখছেন অন্ডাল-সহ আসানসোল-দুর্গাপুরের শিল্পোদ্যোগীরা।
রেল সূত্রের দাবি, খনি ও শিল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হওয়াতেই অন্ডাল পর্যন্ত করিডর তৈরির কথা ভাবা হয়েছে। তাতে পশ্চিম বর্ধমানের খনি এলাকা থেকে কয়লা ও নানা সংস্থার কাঁচামাল পরিবহণে বাড়তি সুবিধা মিলবে। অন্ডাল থেকে সড়ক যোগাযোগের সুযোগ ভাল। উত্তরবঙ্গ, এমনকি উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে পণ্য পরিবহণ সহজ হবে বলে ধারণা। অন্ডালে বিমানবন্দর থাকার কারণেও বাড়তি সুবিধা হবে বলে আশা।
আসানসোল-দুর্গাপুরের শিল্পোদ্যোগীদের আশা, অন্ডাল পর্যন্ত করিডর হলে এলাকার শিল্পে জোয়ার আসবে। কয়লা ও ইস্পাত পরিবহণ সহজ হবে। সিমেন্ট, সার-সহ অন্যান্য শিল্পের প্রসার ঘটবে। ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্সঅ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়ের কর্তা রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতানের কথায়, ‘‘বাধাহীন ভাবে পণ্য পরিবহণ করা গেলে সময়ে কাঁচামাল মিলবে ও পণ্য বাজারে পাঠানো যাবে। উপকৃত হবে শিল্প।’’
ডানকুনি অবশ্য হতাশ। স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য তৃণমূলের সুবীর মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই প্রকল্প অনুমোদন করেন। জমি অধিগ্রহণ অনেকটাই শেষ হয়েছে। দিঘার কাছে নতুন বন্দর হচ্ছে। ডানকুনি পর্যন্ত করিডর হলে রাজ্যে পণ্য পরিবহণে দিগন্ত খুলত। কিন্তু কেন্দ্র রাজনীতি করছে।’’ তবে বিজেপিরশ্রীরামপুর সাংগঠনিক সভাপতি মোহন আদক বলেন, ‘‘বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। প্রকল্প নিয়ে ডানকুনির মানুষের আবেগ দলের নেতৃত্বকে জানিয়েছি। এখনই হতাশার কিছু নেই।’’ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, “অন্ডালকে কেন্দ্র করে পণ্য পরিবহণের অনেকটা হয়। তাই আপাতত ডানকুনির বদলে অন্ডাল পর্যন্ত প্রকল্পটি হবে বলে জানিয়েছে রেল মন্ত্রক।”