কোচবিহার তৃণমূল নেতা গ্রেফতার। —নিজস্ব চিত্র।
দিন কয়েক আগে তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি থেকে ব্রাউন সুগার এবং ব্রাউন সুগার তৈরির সামগ্রী উদ্ধার হয়েছিল। এ বার ইয়াবা ট্যাবলেট পাচার করতে গিয়ে রাজ্য পুলিশের এসটিএফের হাতে গ্রেফতার তৃণমূলের এক অঞ্চল সভাপতি, পঞ্চায়েতের এক সদস্য-সহ মোট পাঁচ জন। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে দুই তৃণমূল নেতাকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড ঘোষণা করেছে তাঁদের দল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার রাতে রাজ্য পুলিশের এসটিএফের শিলিগুড়ি টিম অভিযান চালায় কোচবিহারের গীতালদহে। গ্রেফতার হন গীতালদহ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মাফুজার রহমান এবং ওই এলাকারই তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সেরাজুল হক। তাঁদের কাছ থেকে দেড় কেজি ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার হয়েছে। এসটিএফের তরফে জানানো হয়, ২১ এপ্রিল, সোমবার কোচবিহার এলাকায় অভিযান চালিয়েছিল তারা। সেখানে অন্তঃরাজ্য মাদকচক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে চার জন পুরুষ এবং একজন মহিলা রয়েছেন। ধৃতদের নাম মাফুজার রহমান, খাজিদুল হক, তোতা বিবি, সেরাজুল হক, ইরশাদ হোসেন। এঁরা প্রত্যেকেই দিনহাটার বাসিন্দা। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এসটিএফ জানতে পেরেছে, নাগাল্যান্ডের ডিমাপুর থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে এসে স্থানীয় বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্য ছিল তাঁদের। অভিযুক্তদের কাছ থেকে মোট ১.৫ কেজি ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া গিয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকা।
তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি এবং পঞ্চায়েত সদস্য গ্রেফতার হওয়ার পর বিজেপির তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে শাসকদলকে নিশানা করা হয়। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসুর কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মাফুজার রহমান একজন আন্তর্জাতিক পাচারকারী। এর আগেও তিনি বাংলাদেশে থেকে গ্রেফতার হয়েছিলেন। তৃণমূলের জেলার (কোচবিহার) নেতাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। তাঁরাও ওই মাদক পাচারের অর্থের ভাগা পান।’’ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত জীবনে কে কেমন, তিনি কী ব্যবসা করেন, তা আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। গতকাল (সোমবার) যখনই আমরা জানতে পেরেছি, সঙ্গে সঙ্গে আমারা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অভিযুক্তকে আমরা দল থেকে বহিষ্কার করব।’’
ঘটনাক্রমে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাফুজার ও সিরাজুলকে ৬ বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করার কথা ঘোষণা করেছে তৃণমূল।