ছবি: পিটিআই।
দু’জনের নামই জড়িয়েছে সারদা-কাণ্ডে। এ বার চলচ্চিত্রাভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর পথেই হাঁটলেন অভিনেত্রী শতাব্দী রায়। অর্থ লগ্নি সংস্থা সারদার কাছ থেকে নেওয়া যাবতীয় টাকা ফেরত দিয়ে দিলেন তিনি। শতাব্দী মঙ্গলবার ৩০ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকার ডিমান্ড ড্রাফট এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে ওই সংস্থা সূত্রের খবর।
সারদা থেকে নেওয়া প্রায় দেড় কোটি টাকা এর আগে একই ভাবে ফেরত দিয়েছেন মিঠুন। সেটা ২০১৫ সালের মাঝামাঝি। ‘বাংলা বলছে, সঙ্গে মিঠুন’ শীর্ষক একটি টিভি অনুষ্ঠানের ৫২টি এপিসোড বা পর্বের জন্য সারদার কাছ থেকে ওই টাকা নিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, তার মধ্যে মাত্র ন’টি এপিসোডের শুটিং হয়েছিল এবং সাতটি এপিসোড দেখানো হয়েছিল চ্যানেল টেনে। এই বিষয়ে ইডি অফিসারেরা কয়েক বার জিজ্ঞাসাবাদ করেন মিঠুনকে। তিনি ডিমান্ড ড্রাফটে ওই টাকা ফেরত দেন। তার পরে থেকে আর তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়নি। তাঁর দরজাও মাড়াননি কেউ।
শতাব্দী বুধবার জানান, মিঠুনের মতো তিনিও শিল্পী হিসেবে কাজ করেছিলেন। সারদার সঙ্গে তাঁদের কোনও ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল না। ‘‘তা সত্ত্বেও এত হেনস্থা হতে হচ্ছে যে, আর সহ্য হচ্ছিল না। শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে। সম্মান নষ্ট হচ্ছে। এই নিয়ে নানা রকম গল্প তৈরি হচ্ছে। আমি তাই সারদা থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দিয়ে দিলাম। যে-সব গরিব মানুষের টাকা নেওয়া হয়েছে, তাঁরা যাতে তা ফেরত পান, তার জন্যই ফেরত দিলাম,’’ বললেন শতাব্দী। ওই অভিনেত্রী জানান, সারদার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে তিনি সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে টাকা পেয়েছিলেন। ইডি অফিসারদের একাংশের বক্তব্য, সারদার বিভিন্ন অনুষ্ঠান বা প্রোডাক্টের মূল মুখ হিসেবে অন্য এক অভিনেত্রীকে দেখা যেত। প্রশ্ন উঠছে, রাজ্য সরকার যখন সারদার আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য শ্যামল সেন কমিশন বসিয়েছিল, শতাব্দী সেই সময় টাকা ফেরত দেননি কেন? ইডি-র একটি সূত্র জানাচ্ছে, শতাব্দীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় তদন্তকারীদের তরফে বলা হয়েছিল, তিনি সারদার কাছ থেকে যে-টাকা নিয়েছেন, তার সমমূল্যের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নেওয়া হবে। তাতে আপত্তি করেন শতাব্দী। তার পরেই তিনি এই টাকা ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দেন এবং তা ফেরত পাঠান।