—প্রতীকী ছবি।
নজিরবিহীন ভাবে দেবীপক্ষেই বসতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার একদিনের অধিবেশন। আগামী সোমবার অধিবেশন বসার আগে বৈঠকে বসবে বিধানসভার কার্যবিবরণী কমিটির বৈঠক। সেখানে স্থির হবে, কতক্ষণ চলবে অধিবেশনের কাজকর্ম। অধিবেশনের একদিনের প্রস্তুতির জন্য মহালয়ার ছুটির দিন শনিবার বিধানসভার সচিবালয় খোলা রাখা হবে। তবে অধিবেশনে কী নিয়ে আলোচনা হবে, তা আনুষ্ঠানিক ভাবে জানার পরেই একদিনের অধিবেশনে তারা যোগদান করবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিজেপি পরিষদীয় দল। এমনটাই জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বিধানসভা সূত্রে খবর, গত বাদল অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মন্ত্রী ও বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন। সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে গেলে দু’টি বিলে সংশোধন জরুরি। বিল সংশোধন না হলে মন্ত্রী বিধায়কদের বর্ধিত বেতন দেওয়া যাবে না। তাই প্রয়োজন বুঝে তড়িঘড়ি বিধানসভার অধিবেশন একদিনের জন্য বসিয়ে বিল দু’টি পাশ করিয়ে নেওয়া হবে। বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, মন্ত্রীদের বেতন বৃদ্ধি করতে ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল স্যালারিস অ্যান্ড অ্যালায়েন্স অ্যাক্ট ১৯৫২’ ও বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি করতে ‘বেঙ্গল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি (মেম্বার অ্যামিউজমেন্টস) অ্যাক্ট ১৯৩৭’ সংশোধন করা হবে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর বিধানসভায় নিজের বক্তব্য শেষে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, মন্ত্রী থেকে বিধায়ক সব স্তরেই ৪০ হাজার টাকা করে বেতন বৃদ্ধি করছে সরকার। সরকারের বেতন কাঠামো অনুযায়ী, বিধায়কদের বেতন প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা থেকে বেড়ে হল ৫০ হাজার টাকা। রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীরা এত দিন মাসে ১০ হাজার ৯০০ টাকা করে পেতেন। এখন থেকে তাঁরা পাবেন ৫০ হাজার ৯০০ টাকা। এ ছাড়া, রাজ্যে যে পূর্ণমন্ত্রীরা আছেন, তাঁদের বেতন ছিল ১১ হাজার টাকা। তাঁরা বেতনবাবদ এ বার থেকে ৫১ হাজার টাকা পাবেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এবং প্রতিমন্ত্রী, পূর্ণমন্ত্রীরা এত দিন ভাতা ইত্যাদি মিলিয়ে এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা পেতেন। এ বার থেকে তাঁরা পাবেন প্রায় দেড় লক্ষ টাকা।
কিন্তু ওই সিদ্ধান্তকে সমর্থন না করার কথা জানিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। তিনি বলেছিলেন, ‘‘বিধায়কের ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে সমর্থন করি না।’’ যদিও, আইনগত কারণে এই বর্ধিত বেতন না নেওয়ার উপায় নেই বিজেপি বিধায়কদের। বিরোধী দলনেতা তাঁর বর্ধিত বেতন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চকে তাঁদের লড়াইয়ের জন্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।
তবে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ইতিহাসে দেবীপক্ষে কখনও অধিবেশন বসেছে কি না, বা এমন কোনও ঘটনা স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে ঘটেছে কিনা তাও মনে করতে পারছেন না পরিসংখ্যানবিদরা।