জাত-পাতের রাজনীতির বিপক্ষে বামেরা। —ফাইল ছবি
বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব ঘোষণা করছেন, সারা দেশেই নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) চালু করা হবে। তৃণমূল বলছে, এনআরসি-র নামে অসম থেকে ‘বাঙালি খেদাও’ মেনে নেওয়া হবে না। এই হুঙ্কার, পাল্টা হুঙ্কারের জেরে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠবে বলেই আশঙ্কা করছে বামেরা। তাদের দাবি, ধর্ম-ভাষার নামে বিভাজন না করে বৈধ নাগরিকদের সমস্যা সমাধান করা হোক সুষ্ঠু ভাবে।
বিভাজনের রাজনীতির প্রতিবাদেই প্রজাতন্ত্র বা স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ইদানীং ‘মানব বন্ধন’ কর্মসূচি নেয় বামেরা। কলকাতায় বুধবারও নোনাপুকুর থেকে মৌলালি পর্যন্ত মানব বন্ধনে সামিল হয়েছিলেন বাম দলগুলির রাজ্য নেতৃত্ব। এন্টালি মার্কেটের সামনে ছিল ছোট সভার আয়োজন। ওই কর্মসূচিতেই বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বসেন, ‘‘অসম বনাম বাংলা লড়াই হিসেবে দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে। আমরা বাংলার বিরুদ্ধে, অসমেরও বিরুদ্ধে নই। বৈধ নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করাই আমাদের দাবি।’’ উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার থেকে বৈবাহিক সূত্রে অসমে যাওয়া বহু মহিলার নাগরিকত্ব নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে এনআরসি-র জেরে, সেই প্রসঙ্গও তুলেছেন বিমানবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল নেত্রী এখন নানা হুঙ্কার দিচ্ছেন। কিন্তু অসম থেকে যখন কাগজপত্র যাচাই করার জন্য পাঠানো হয়েছে, সেগুলো ঠিকমতো করেনি এখানকার রাজ্য সরকার! মাত্র কয়েক হাজার কাগজপত্রের কাজ করা হয়েছে।’’
কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরোধিতাতেই মূলত এ দিনের কর্মসূচি ছিল। বিমানবাবু অভিযোগ করেছেন, নরেন্দ্র মোদী জমানার চার বছরে জাত, ধর্ম বা ভাষার নামে বহু সংঘর্ষ বাধানোর চেষ্টা হয়েছে। বেড়েই চলেছে পিটিয়ে মারার সংস্কৃতি। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘ক্ষমতায় আসার আগে কী বলেছিলেন আর এখন কী হচ্ছে! টাকার দামের রেকর্ড পতন হয়েছে। টাকার দাম কমলে বাজারে দাম বাড়বে।’’ একই সঙ্গে সূর্যবাবুর দাবি, ‘‘মানুষ ওঁদের ধোঁকা ধরে ফেলেছেন।’’
অসমে এনআরসি-র প্রেক্ষিতে নাগরিক অধিকার রক্ষার ডাক দিয়ে এ দিনই সন্ধ্যায় টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো থেকে নেতাজিনগরে ‘উদ্বাস্তু মূর্তি’ পর্যন্ত মশাল মিছিল করেছে ফরওয়ার্ড ব্লকের যুব লিগ এবং প্রসেনজিৎ বসুদের মঞ্চ।