প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সংখ্যাতেই কর্মী-সমর্থকেরা যোগ দিয়েছিলেন নবান্ন অভিযানে। পুলিশি আক্রমণের মুখে ‘অদম্য মানসিকতা’ নিয়ে অভিযানকারী মানুষ লড়াই করেছেন। এবং অভিযানে সরাসরি অংশ না নেওয়া সাধারণ মানুষের সাহায্য-সমর্থনও পেয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আহতদের চিকিৎসার জন্য খরচ সংগ্রহ এবং ধিক্কার মিছিলের জন্য পথে নামতে গিয়ে তা বোঝা গিয়েছে। নবান্ন অভিযান থেকে দলের এই ‘প্রাপ্তি’র কথা বৃহস্পতিবার রাজ্য কমিটির বৈঠকে জানালেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।
আলিমুদ্দিনে দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকের শুরুতে নবান্ন অভিযান নিয়ে পর্যালোচনা রিপোর্ট পেশ করেছেন সূর্যবাবু। ওই কর্মসূচিতে দলের সর্বস্তরের সব কর্মীকে অংশ নিতে হবে বলে নির্দেশ জারি হয়েছিল সিপিএমে। এমনকী, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বা গৌতম দেবের মতো যে সব নেতা শারীরিক কারণে মিছিলে থাকতে পারেননি, তাঁরাও আলিমুদ্দিনে কন্ট্রোল রুমে দায়িত্ব পালন করেছেন। সাম্প্রতিক বিভিন্ন নির্বাচনে বিজেপি-র উত্থান এবং বামেদের তৃতীয় স্থানে নেমে যাওয়ার পরেও নবান্ন অভিযানে যে ভাবে বিপুল জমায়েত হয়েছে ও কর্মী-সমর্থকেরা প্রতিরোধের মনোভাব নিয়ে পুলিশের লাঠি-রাসায়নিক গ্যাসের সামনে দাঁড়িয়েছেন, তাকে ইতিবাচক হিসাবেই দেখছেন সূর্যবাবুরা। আন্দোলনের রেশ টেনে এলাকাভিত্তিক কর্মসূচি নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগে বুথ স্তরে সংগঠন চাঙ্গা করাই এখন আলিমুদ্দিনের সামনে চ্যালেঞ্জ। তবে নবান্ন অভিযানে কত মানুষ আসবেন, তা আগাম আন্দাজ করে পরিকল্পনার ক্ষেত্রে তাঁদের কিছু খামতি ছিল বলেও বৈঠকে স্বীকার করে নিয়েছেন সূর্যবাবু। হাওড়ার দিকে জমায়েত করতে আসা কয়েকটি জেলার প্রতিনিধিরাও বৈঠকে তুলে ধরেছেন পরিকল্পনার গলদের কথা।
সীতারাম ইয়েচুরিকে কেন তৃতীয় বার রাজ্যসভায় প্রার্থী করতে পলিটব্যুরোর কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, তা রাজ্য কমিটিতে ব্যাখ্যা করেছেন রাজ্য সম্পাদক। দু’টি জেলার প্রতিনিধিরা প্রশ্ন তুলেছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা হবে না বলে বিধানসভা ভোটের পরে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তার পরেও কেন কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে সাধারণ সম্পাদককেই রাজ্যসভায় যেতে হবে? সূর্যবাবুর যুক্তি, সংসদে বিজেপি-বিরোধী লড়াইয়ে দলের মুখ ইয়েচুরিই।