সোমেন মিত্র ও বিমান বসু
দু’পক্ষে সমঝোতা করেই তিন বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত পাকা। এ বার কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। যৌথ ভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পাশাপাশি আন্দোলনের যৌথ মঞ্চ গড়ার প্রস্তাব নিয়েও সেই বৈঠকে কথা হবে।
তিন বছর আগে বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস ও বামেদের আসন সমঝোতা হলেও বাম শরিক-সহ ফ্রন্ট নেতৃত্বের সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও মুখোমুখি বৈঠক হয়নি। এ বার আলোচনার টেবিলে শরিক নেতৃত্বকে নিয়েই বসতে চায় আলিমুদ্দিন। উপনির্বাচনে প্রার্থীদের নাম যৌথ ভাবে ঘোষণা করতেও কোনও তরফে বিশেষ আপত্তি নেই। আলিমুদ্দিনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বামফ্রন্টের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আজ, বুধবার বা কাল, বৃহস্পতিবারের মধ্যেই কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠকের চেষ্টা হবে। তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে আজই।
কালিয়াগঞ্জ ও খড়গপুর সদর আসন কংগ্রেসকে ছেড়ে করিমপুরে তারা লড়বে, এই প্রাথমিক সমঝোতার সূত্রই এ দিন বামফ্রন্টে আনুষ্ঠানিক সিলমোহর পেয়েছে। দু’পক্ষ নিজেদের প্রার্থীদের নাম ঠিক করে পরস্পরের সঙ্গে কথা বলে নেবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান কালিয়াগঞ্জ ও করিমপুরে বাম-কংগ্রেস সমঝোতার পাশাপাশি খড়গপুর আসনে তৃণমূলকে সমর্থনের প্রস্তাব দিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে চিঠি দিয়েছিলেন। গোটা রাজ্যের কংগ্রেসে তাঁর সেই প্রস্তাব অবশ্য কল্কে পায়নি। বামফ্রন্ট বৈঠকে এ দিন আরএসপি মান্নানের ওই চিঠির প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেসের মনোভাব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিল। তবে বাম সূত্রের খবর, বাকি নেতারা মান্নানের চিঠিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাননি। বরং, তাঁদের যুক্তি, বাম ও কংগ্রেসের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরির জন্য বিজেপি বা তৃণমূল ‘ফাঁদ’ পেতে থাকতে পারে। সেই ফাঁদে পা দেওয়া অনুচিত হবে।
বিধান ভবনে প্রদেশ কংগ্রেসের নির্বাচন কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে কাল, বৃহস্পতিবার। সেখানেই কালিয়াগঞ্জ ও খড়গপুরের দুই প্রার্থীর নাম ঠিক হবে। কংগ্রেসের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্ব অবশ্য সম্ভাব্য প্রার্থীর পরিচিতি করাতে নেমে পড়েছেন। রেলশহরের বাসিন্দা তথা কংগ্রেসের জেলা কার্যকরী সভাপতি দেবাশিস ঘোষের মতে, ‘‘বিজেপি-তৃণমূলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বে আমরা খড়্গপুরে ভাল অবস্থানে রয়েছি। সেখানে মান্নানদা’র এমন চিঠি ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য বলে মনে হচ্ছে। এর তীব্র প্রতিবাদ করছি আমরা।’’ বামফ্রন্টের এক নেতার কথায়, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠক সম্ভবত তাদের বা সিপিএমের দফতরের বাইরে তৃতীয় কোনও স্থানে হবে। যৌথ মঞ্চের বিষয়টিও আলোচনায় আসতে পারে।’’ বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের এক প্রস্ত কথাও হয়েছে।