নবান্ন অভিযান এবং সাধারণ ধর্মঘটে রাস্তায় নেমে প্রতিরোধ হয়েছিল। সামনে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নেতারা। তার প্রভাব পড়েছে গোটা সংগঠনে। মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগেই বাম ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলির ডাকে ‘রাজভবন অভিযানে’ ভিড় হয়েছে ভালই। এই সব দৃষ্টান্তকে সামনে রেখেই এ বার বিধাননগর, আসানসোল-সহ পুরসভা এবং শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নির্বাচনে শাসক দলের ‘ভোট লুঠে’র চেষ্টাকে প্রতিরোধ করার আহ্বান উঠে এল সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে।
আলিমুদ্দিনে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে সিপিএমের রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠক। এ বারের বৈঠকে প্রত্যাশিত ভাবেই সাম্প্রতিক কালের একাধিক কর্মসূচির সাফল্যের কথা উঠে এসেছে। আন্দোলনের গতিকে আরও তীব্র করার আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও। একই সঙ্গে রাজ্য কমিটির একাধিক সদস্য মত দিয়েছেন, শুধু পথে নেমে কর্মসূচি নিয়ে চোখে পড়াই শেষ কথা নয়। নির্বাচনের সময় শাসক দলের ‘সন্ত্রাস’ প্রতিহত করতে না পারলে আক্রমণ এবং নৈরাজ্য আরও বাড়বে। তাই পঞ্চায়েতের ত্রিস্তরে আসন্ন উপনির্বাচন, কয়েকটি পুরসভা এবং শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোটে ‘সন্ত্রাস’ প্রতিরোধে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে হবে বলে তাঁরা মন্তব্য করেছেন।
জেলায় জেলায় কী ভাবে শাসক দলের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেও বাম কর্মী-সমর্থকেরা আবার কর্মসূচি পালন করতে রাস্তায় নামছেন, তার উদাহরণ দেওয়া হয়েছে নানা জেলা থেকেই। শিলিগুড়ির জীবেশ সরকার যেমন বলেছেন, পুরভোটে তৃণমূল ধাক্কা খাওয়ার পর থেকে যে কোনও অছিলায় গোলমাল লাগানো হচ্ছে। কিন্তু বাম কর্মী-সমর্থকেরাও পিছিয়ে যাচ্ছেন না। বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার নেতারা জানিয়েছেন, জঙ্গলমহলে সর্বস্তরে তৃণমূলের নিরঙ্কুশ আধিপত্য সত্ত্বেও সমবায় সমিতিগুলির নির্বাচনে বামেরা ফের সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছে। তৃণমূলকে রুখতে বিধাননগরে সদ্যগঠিত নাগরিক মঞ্চের মডেলের পক্ষেও সওয়াল হয়েছে এ দিনের বৈঠকে।
দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোট হতে দিলে তৃণমূলের পক্ষে কোথাওই এখন নিরঙ্কুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। সেই জন্যই তারা আরও মরিয়া হচ্ছে। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এই প্রবণতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলাই এখন সামনের লক্ষ্য।’’