পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন খারিজ। — ফাইল ছবি।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)-র রিমান্ড কপিতে তাঁকে ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় তিনি কিছু বলতে পারছেন না। তাই মঙ্গলবার আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে কথা বলার সুযোগ চাইলেন স্কুল নিয়োগ দু্র্নীতিতে অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পাশাপাশি, রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন করলেন তাঁর আইনজীবী। যদিও সেই আবেদন খারিজ করে আগামী ২৭ তারিখ পর্যন্ত পার্থ-সহ নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সাত জনকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
মঙ্গলবার আলিপুর বিশেষ সিবিআই আদালতে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার জামিনের শুনানি ছিল। সেখানেই আইনজীবীর মাধ্যমে পার্থ জানিয়েছেন, সিবিআইয়ের রিমান্ড কপিতে তাঁকে ‘মাস্টারমাইন্ড’ উল্লেখ করা হচ্ছে। আইনজীবীর মাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘আমাকেও সুযোগ দেওয়া হোক। কেন এ সব বলা হচ্ছে? আমার বলার রয়েছে।’’ পার্থের আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, যা অপরাধ হয়েছে, তাঁর বিচার হবে। কিন্তু তাঁরা চার্জশিটের কপি এখনও পাননি। ‘হেফাজতে থাকার জন্য হেফাজতে রয়েছেন’ তাঁর মক্কেল। দ্রুত বিচার চেয়ে আগের শুনানিতেও সরব হয়েছিলেন পার্থ। এজলাসে নিজে উঠে দাঁড়িয়ে হাতজোড় করে আর্জি জানিয়েছিলেন। সেই নিয়ে বিচারক ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই প্রসঙ্গে আদালত থেকে বার হওয়ার সময় পার্থকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কোর্টকে কোনওদিন অপমান করব না, করিওনি।’’
মঙ্গলবার জেলে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়েও অভিযোগ করেছেন পার্থের আইনজীবী। তিনি জানিয়েছেন, জেল থেকে এসএসকেএমে চিকিৎসার জন্য কাগজ পাঠানো হচ্ছে। জবাব আসছে দেরিতে। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘মেডিক্যাল এমার্জেন্সি বলে তো একটা কথা রয়েছে?’’ চিকিৎসা বিভ্রান্তির অভিযোগ তুলে অন্তর্বর্তী জামিন চেয়েছেন পার্থের আইনজীবী শেখ সেলিম রহমান। তিনি বলেন, ‘‘মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে জামিন চেয়েছি। মেডিক্যাল রিপোর্ট এসেছে। তাতে দেখা গিয়েছে উনি অসুস্থ। যে চিকিৎসা চলছে, ওঁকে এক ডজন ওষুধ খেতে হয়। হাসপাতালে রেখে ওই ওষুধ খাওয়ানো সম্ভব। ওই পরিকাঠামো জেলে নেই।’’
নিয়োগ দু্র্নীতিতে আর এক অভিযুক্ত শান্তিপ্রসাদ সিন্হারও জামিনের আবেদন করেছেন তাঁর আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত। এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেল অসুস্থ। তাই জামিন দেওয়া হোক। অন্য দিকে, জামিনের আবেদন করেছেন নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বাগদার চন্দন মণ্ডলের আইনজীবী এবং নীলাদ্রি দাসের আইনজীবী। নীলাদ্রির আইনজীবী জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেল সিবিআইকে সহযোগিতা করেছেন। কোনও ‘অপরাধ’ করেননি। তিনি সাক্ষী। তিনি কী ভাবে কাউকে চাকরি দেবেন। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। যদিও সকলের জামিনের আবেদনই কারিজ করে দিয়েছেন বিচারক।