— ফাইল ছবি।
মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ না এলে, তাঁর দফতরে কী চলছে তা ব্যক্তিগত ভাবে জানা সম্ভব নয়। সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে এই কথা জানিয়েই নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের হয়ে সওয়াল করলেন তাঁর আইনজীবী। প্রশ্ন তুললেন, রাস্তায় গাড়ি দুর্ঘটনা হলে কি তার জন্য পরিবহণ মন্ত্রীকে দায়ী করা হবে?
সোমবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই সশরীরে হাজির করানো হয় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থকে। আদালতে তাঁর জামিনের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী সেলিম রহমান। তিনি জানান, শুনানির সময় বিচারক প্রশ্ন করেছেন, অনিয়ম হলে পার্থ ব্যবস্থা নেননি কেন? মন্ত্রী হিসাবে কি তিনি দায় এড়াতে পারেন? তার জবাবে যে যুক্তি দিয়েছেন সেলিম, তা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। আইনজীবীর কথায়, ‘‘এক জন পরিবহণ মন্ত্রী বা রেল মন্ত্রীর রাস্তা বা রেল লাইন ঠিক রাখার কর্তব্য। কিন্তু দু্র্ঘটনা হলে সে বিষয়ে মন্ত্রীর ব্যক্তিগত ভাবে জানা সম্ভব নয়। মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ না আসা পর্যন্ত তাঁর জানা সম্ভব নয়।’’
আইনজীবী আরও বলেন, ‘‘মন্ত্রীর দফতরে ১০ বা ২০ হাজার কর্মচারী রয়েছেন। কারও বিষয়ে ব্যক্তিগত ভাবে খোঁজ রাখা সম্ভব নয়। তাঁকে অভিযুক্ত করতে গেলে দেখাতে হবে, যে তিনি দুর্নীতির বিষয়ে জানতেন। নয়তো অভিযুক্ত করা সম্ভব নয়।’’ এর পরেই তিনি জানান, বিচারকের কাছে পার্থের জামিন চাওয়া হয়েছে। শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তী জামিন নিতেও সমস্যা নেই। তাঁর কথায়, ‘‘আমার মক্কেলের যা ব্যাকগ্রাউন্ড, যা সুনাম, তাতে জেলে আটকে রাখার মতো অভিযোগ সিবিআই করতে পারেনি।’’
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে দীর্ঘদিন জেলে আটকে রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিযুক্ত শান্তিপ্রসাদ সিনহা এবং নীলাদ্রি দাসের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত। তিনি জানিয়েছেন, কী ভাবে সিবিআইয়ের অভিযোগ খণ্ডন করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সিবিআইয়ের চার্জশিটে বলা হয়েছে ওএমআর শিটে কারচুপি হয়েছে। আমি চার্জশিট থেকে দেখিয়েছি, তা হয়নি। কারণ তা কখনও এসএসসির দফতর থেকে বাইরেই যায়নি। ওএমআর শিট পোড়ানোও হয়নি। সিবিআই বলছে, নিয়ম মেনে বালাজি সলিউশনস সংস্থাকে দিয়ে ওয়ার্ক অর্ডার ইস্যু করে পুরনো হয়ে গেলে যেমন পোড়ানো হয়, তা করা হয়েছে।’’ আরও একটি অভিযোগ খণ্ডন করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘সিবিআই লিখিত পরীক্ষার তালিকা পুরো বেরোয়নি বলে দাবি করেছে। ওই তালিকা আলাদা বার হয় না। ওএমআর শিটে ৪৫ নম্বর থাকে। বাকি ১৫ নম্বর অ্যাকাডেমিকসে থাকে। অর্থাৎ শংসাপত্রে। তার পর হয় ইন্টারভিউ। তাতে পেলে পার্সোনালিটি টেস্ট। আমি দেখিয়েছি।’’ সিবিআই তদন্তে দেরি নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘এই দীর্ঘসূত্রিতার কারণে আমরা জেলে থাকব, এটাও আইন নয়। বিচারক আশ্বাস দিয়েছেন, তিনি বিশেষ নির্দেশ দেবেন, যাতে তদন্ত দীর্ঘায়িত না হয়।’’