মারা গেলেন তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদ (৬৪)। সোমবার সকালে রিপন স্ট্রিটের বাড়িতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন তিনি। নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হলে উলুবেড়িয়ার সাংসদকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
তৃণমূলের অভিযোগ, সুলতানের ভাই ইকবাল আহমেদের নামে এ দিন সকালে সিবিআইয়ের নোটিস আসে। তাতে নারদ-তদন্তে সোমবারই বেলা ১১টায় তাঁকে সিবিআই দফতরে হাজির হতে বলা হয়। এর অল্প পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সুলতান এবং প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মৃত্যু হয়। নারদ কাণ্ডে নাম ছিল সুলতানেরও। একবার সিবিআই এবং একবার ইডি তাঁকে জেরা করেছিল। ইডি-র দাবি, ১৩ জুলাই তাদের কাছে ম্যাথুর থেকে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে সুলতান জানান, ওই টাকা লোকসভা ভোটে খরচ করেছেন। উলুবেড়িয়ার এক ভুঁইফোড় অর্থলগ্নি সংস্থার সঙ্গেও নাম জড়িয়েছিল সুলতানের।
এ দিন দুপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুনলাম মৃতদেহ যখন নিয়ে আসা হচ্ছে, তখনও সিবিআই চিঠি পাঠিয়েছে!’’ সন্ধ্যায় সুলতানের রিপন স্ট্রিটের বাড়িতে গিয়েও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সকাল দশটা, সাড়ে দশটা নাগাদ ইকবাল বা অন্য কারও নামে চিঠি আসে। তাতে খুব চিন্তিত হয়ে পড়ে সুলতান। তার পরেই বাথরুমে যায়। সেখানেই মারা গিয়েছে।’’ তৃণমূল রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী বলেন, ‘‘কেন্দ্র ও তার শাসক দল গত সাত-আট মাস ধরে সুলতানকে হেনস্থা করেছে।’’
আরও পড়ুন: লন্ডনে, তাই ইডি-তে এলেন না মেয়র-পত্নী
যদিও তৃণমূলেরই মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লার মন্তব্য, ‘‘সিবিআইয়ের চাপে কেউ মারা যায় নাকি! হার্ট অ্যাটাক তো যখন-তখন হতে পারে।’’ বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের আবার অভিযোগ, ‘‘এটি তৃণমূলের পাপের ফল। ময়নাতদন্ত না হলে সত্য সামনে আসবে না।’’ সুলতানের পরিবার সূত্রে খবর, আগে দু’বার হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন তিনি। দু’বার অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টিও করা হয়েছিল।
সিবিআই সূত্রে এ দিন ইকবালের নামে চিঠি পাঠানোর কথা অস্বীকার করে বলা হয়েছে, লোক মারফৎ সেই চিঠি ১ সেপ্টেম্বর পাঠানো হয়েছিল।
সুলতান ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, শুধু সিবিআই নয়, দলের দিক থেকেও যথেষ্ট চাপে ছিলেন তিনি। নারদ-কাণ্ডে নাম ওঠায় দলের কোর কমিটির বৈঠকে সমালোচিত হন। সম্প্রতি রাজ্যের সংখ্যালঘু বিত্ত কমিশনের চেয়ারম্যানের পদ ছাড়তে হয় তাঁকে।
সুলতানের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।