রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্যাব
রাজ্যপাল বনাম রাজ্য প্রশাসনের সঙ্ঘাত এখন প্রায় নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। সেই সঙ্ঘাত আরও বাড়ল মহাত্মা গাঁধীর মৃত্যু বার্ষিকীতে। নজিরবিহীন ভাবে রাজ্যের বর্ষীয়ান মন্ত্রীর সামনে, সংবাদ মাধ্যমের উপস্থিতিতে রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষ কর্তাকে চূড়ান্ত ভর্ৎসনা করলেন। সেখানেই শেষ নয়। এর পর গোটা প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুললেন নৈরাজ্যের অভিযোগ তুলে।
মঙ্গলবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে ছাত্র-ছাত্রীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে, মূল মঞ্চে না এসেই অনুষ্ঠানস্থল থেকে চলে যেতে হয়েছিল রাজ্যপালকে। ফিরে গিয়ে তিনি টুইট করে জানিয়েছেন, রাজ্য প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তার দু’দিন পরেই বৃহস্পতিবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গ তুলে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় মন্তব্য করেন, ‘‘গোটা রাজ্য এক বিস্ফোরক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলছে। যেখানে কোনও আইনের শাসন নেই। কেউ আইনকে সম্মান দেয় না। এক চূড়ান্ত নৈরাজ্য।”
ব্যারাকপুরের গাঁধী ঘাটে মহাত্মা গাঁধীর প্রয়াণ বার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখানে অনুষ্ঠানের শেষে তিনি রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সামনেই ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মাকে ভর্ৎসনা করেন। তার পরই সাংবাদ মাধ্যমের সামনে তিনি ফের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ তুলে প্রশ্ন তোলেন, ‘‘ওই দিন কোথায় ছিল কলকাতা পুলিশ? এক জনও উর্দিধারীকে দেখতে পেয়েছেন? কোথায় ছিলেন স্বরাষ্ট্র সচিব?” একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব যাঁদের, তাঁরা ভাবেন তাঁদের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন করার কেউ নেই।” রাজ্যপালের অভিযোগ, ‘‘এ রাজ্যে আমলারা তাঁদের দায়িত্ব-কর্তব্য ভুলে গিয়েছেন। এখানে কেউ কোনও ভাষা বোঝেন না। সবাই রাজনীতিতে আটকে গিয়েছেন।”
আরও পড়ুন:ব্যারাকপুরে মন্ত্রীর সামনে সিপিকে বেনজির ভর্ৎসনা রাজ্যপালের
আরও পড়ুন:দিল্লি নির্বাচনের আগে ধাক্কা বিজেপির, প্রচারে অনুরাগ এবং প্রবেশকে নিষিদ্ধ করল কমিশন
মহাত্মা গাঁধীর অহিংসার বার্তা মনে করিয়ে দিয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘আমাদের এই স্বাধীনতা অনেক রক্তের বিনিময়ে এসেছে।” এর পরেই তিনি কারও নাম না করে মন্তব্য করেন, ‘‘কারও খামখেয়ালি সিদ্ধান্ত, ভ্রান্ত ধারণাকে এ ভাবে প্রশ্রয় দেওয়া যায় না।”