লালবাজার। —ফাইল চিত্র।
দুই বন্ধু স্নান করতে নেমে গঙ্গায় তলিয়ে যাচ্ছিলেন। যা দেখে জলে ঝাঁপ দিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন বির্পযয় মোকাবিলা বাহিনী সদস্যেরা। অন্য একটি ঘটনায় ন’তলা বহুতলে আগুন লাগার পরে লেলিহান শিখা এড়িয়ে আটতলায় পৌঁছে আটকে পড়া তিন জনকে উদ্ধার করেছিলেন ওই বাহিনী সদস্যেরা। কখনও আবার ভেঙে পড়া বিপজ্জনক বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে আটকে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধার করে আনেন কলকাতা পুলিশের অধীন ওই বাহিনীর সদস্যেরা। যে কোনও দুর্ঘটনা অথবা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ঝুঁকি নিয়ে ওঁরা উদ্ধারে নামেন। তাই কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (ডিএমজি) সদস্যেরা যাতে ঝুঁকি ভাতা পান, সেই প্রস্তাব লালবাজারের তরফে পাঠানো হয়েছে নবান্নে। যা মঞ্জুর হলে ওই বাহিনীর সদস্যেরা মাসে বেতনের অতিরিক্ত ৮ শতাংশ টাকা পাবেন।
বর্তমানে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ), রাজ্য পুলিশের ডিএমজি ও কাউন্টার ইনসার্জেন্সি ফোর্স (সিআইএফ)-এর জওয়ানেরা বেতনের সঙ্গে ওই ঝুঁকি ভাতা পান। কলকাতা পুলিশের ডিএমজির মতোই এই ঝুঁকি ভাতার প্রস্তাব নবান্নে পাঠিয়েছে রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সও।
লালবাজার সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের ডিএমজি কর্মীর সংখ্যা ২৭০ জনের মতো। যাঁদের মধ্যে কনস্টেবল ও অফিসার ১২০ জন। বাকিরা সিভিক ভলান্টিয়ার এবং হোমগার্ড। ডিএমজিতে দু’টি ভাগ রয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একদল সদস্য অগ্নিকাণ্ডের জায়গায় বা ধ্বংসস্তূপে ঢুকে উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়েন। অন্য দলটি গঙ্গার ২২ কিমি পর্যন্ত এবং শহরের বিভিন্ন জলাশয় থেকে ডুবন্ত মানুষকে উদ্ধার করেন। পাশাপাশি, কলকাতা পুলিশের বির্পযয় মোকাবিলা বাহিনীকে মাঝেমধ্যে রাজ্য পুলিশের এলাকায় গিয়েও কাজ করতে হয়। আবার কলকাতা সংলগ্ন গঙ্গার সব ঘাটেই নজরদারি চালাতে হয়।
রাজ্য পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী আগেই ওই ঝুঁকি ভাতা পাচ্ছে। কিন্তু একই কাজ করে কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ওই ভাতা পান না। এই বৈষম্য ঘোচাতেই নগরপাল বিনীত গোয়েল নবান্নে ঝুঁকি ভাতার প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। লালবাজারের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘বির্পযয় মোকাবিলা বাহিনী কলকাতা পুলিশের সম্পদ। সে কথা মাথায় রেখেই প্রস্তাব পাঠিয়েছেন কমিশনার। আশা করা যায়, দ্রুত অনুমোদন মিলবে।’’