আমবাগানে অসহায় দিন কাটছে শ্রমিকদের নিজস্ব চিত্র।
ঘরবাড়ি ছেড়ে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল থেকে কাজের সন্ধানে উত্তর ২৪ পরগনায় এসেছিলেন শতাধিক যাযাবর শ্রমিক। কেউ ইটভাটায় কাজ করতেন, কেউ জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করে দিন গুজরান করতেন। কিন্তু কার্যত লকডাউনে সে সব বন্ধ। বাধ্য হয়েই হাড়োয়া রোড স্টেশনের পাশে এক আমবাগানে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। কষ্ট করে কোনও রকমে চলছে তাঁদের। বাড়ি যে ফিরবেন, সেই সামর্থ্যও নেই।
আমবাগান চত্বরেই কোনও রকমে তাঁবু খাটিয়ে রয়েছেন সরস্বতী, রেখা, কমলা, চুমকিরা। বয়স্ক মানুষ থেকে কোলের শিশু, সবাইকে থাকতে হচ্ছে এই ভাবেই। বৃষ্টি এলে আশ্রয় নিতে হয় পাশের স্টেশন চত্বরে। খাবার বলতে পাশের গ্রাম থেকে ভিক্ষা করে যেটুকু জোটে। তার পরে বাগানেই কাঠ জ্বেলে রান্না করে খাওয়া। কিন্তু তাতে দু’বেলা দু’মুঠো খাবারও জোটে না তাঁদের।
সরস্বতী বলেন, ‘‘৩-৪ মাস ধরে আছি। এক বেলা খাবার জোটে। খুব কষ্ট হয়। কোনও সাহায্য পাইনি। এ ভাবে কত দিন থাকতে হবে জানি না।’’ অনেকটা একই কথা রেখার গলাতেও। তিনি বলেন, ‘‘কাজ করতে এসেছিলাম। কাজ বন্ধ। গ্রামে গিয়ে ভিক্ষা করি। কেউ দেয়, কেউ আবার তাড়িয়ে দেয়। আমাদের একটু খাবারের ব্যবস্থা কেউ করে দিলে ভাল হয়।’’ ছোট বাচ্চা নিয়ে সমস্যার কথা বললেন চুমকি। বাচ্চাদের শরীর খারাপ হলে সামান্য ওষুধ কেনার সামর্থও নেই তাঁদের। সবটাই চেয়ে আনতে হয়।
আমবাগানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তাঁবুর মধ্যে কোনও রকমে মাথা গুঁজে থাকা শিশু থেকে বয়স্ক- সবার একটাই আকুতি, তাঁদের দিকেও তাকিয়ে দেখুক সরকার। একটু সাহায্য করে তাঁদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করে দিক। আর কিছু চান না তাঁরা।