চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ। বেঙ্গালুরু ছাড়ার অপেক্ষায় বাংলার শ্রমিকরা।
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে পুলিশ বস্তি ভেঙে দেওয়ার পরে বেঙ্গালুরু থেকে পালাচ্ছেন বাংলার শ্রমিকেরা।
শহরের কারিয়াম্নানা আগ্রহরা এলাকায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা বসবাস করছেন বলে দিন দশেক আগে দাবি করেছিলেন বিজেপির স্থানীয় বিধায়ক অরবিন্দ লিম্বাভালি। এর পরেই গত রবিবার শহরের ওই বস্তির শ’খানেক ঘর ভেঙে দিয়ে কয়েকশো বাসিন্দাকে উচ্ছেদ করে দিয়েছে বেঙ্গালুরু পুরসভা ও পুলিশ। দক্ষিণের একটি ইংরেজি সংবাদপত্র জানিয়েছে, ঘটনার পরেই পশ্চিমবঙ্গ থেকে বেঙ্গালুরুতে কাজ করতে যাওয়া ওই শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। শ্রমিকদের দাবি, ভারতের নাগরিক হিসেবে তাঁদের প্রয়োজনীয় পরিচয়পত্র রয়েছে। পুলিশ সে সব কথা শুনতে নারাজ।
সংবাদপত্রটি জানিয়েছে, বস্তি উচ্ছেদের পরে শহর ছাড়তে শুরু করেছেন শ্রমিকদের একাংশ। এর মধ্যে রয়েছেন মেদিনীপুরের বাসিন্দা আনোয়ার শেখ। বেঙ্গালুরুতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়েছিলেন তিনি। স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে এখন শহর ছাড়ছেন। রবিবারের ঘটনার কথা বলতে গিয়ে আনোয়ার জানিয়েছেন, সকালে পুলিশ বস্তিতে এসে বাংলা ও হিন্দিভাষী সকলকে দ্রুত চলে যাওয়ার জন্য বলে। সবাইকে ঘর থেকে বার করে দেওয়া হয়। আনোয়ারের দাবি, পরিচয়পত্র দেখাতে চেয়েছিলেন তাঁরা, কিন্তু পুলিশ আগ্রহ দেখায়নি। নদিয়ার জাইরুল মনডাকের অভিযোগ, এলাকা না ছাড়লে জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়েছিল পুলিশ। জিনিসপত্র জলের দরে বিক্রি করতে হয়েছে তাঁকে। ফেরার টিকিট পাচ্ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত আজ রওনা দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: চাঁদা না-পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা নাবালিকাকে
বেঙ্গালুরু পুলিশের এক কর্তা বলেছেন, পরিচয়পত্রের সত্যতা যাচাই করতে লক্ষ টাকা খরচ করে পশ্চিমবঙ্গে টিম পাঠানো সম্ভব নয়। আর এ ব্যাপারে অতীতে তাঁরা পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সহযোগিতাও পাননি। এই বিতর্কের মধ্যেই বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার ভাস্কর রাও জানান, ১৩টি এলাকা তাঁরা চিহ্নিত করেছেন, যেখানে অনুপ্রবেশকারীদের বসবাস।
বিজেপি বিধায়ক লিম্বাভালি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছিলেন, তাঁর মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রে অবৈধ ছাউনিগুলিতে বাংলাদেশিরা বাস করছে। অবৈধ কার্যকলাপ চলছে সেখানে। তাঁর দাবি, সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই বিষয়টি জানতে পেরেছেন তিনি, প্রশাসনকে এ নিয়ে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাতিল হোক সিএএ, দাবি মিছিল-ধর্নায়
এর পরেই ওই বস্তিতে পৌঁছয় পুলিশ। বিনয় শ্রীনিবাস নামে এক সমাজকর্মী খবরের একটি ওয়েবসাইটকে জানিয়েছেন, সাদা পোশাকে এসেছিল পুলিশ। পুরসভার কর্মীরা হাজির ছিলেন না। পুলিশের কাছে তাঁরা উচ্ছেদের নির্দেশ দেখতে চাইলে বস্তি ভাঙার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।